গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ শিশু মুসার আশার আলো
সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভালো থাকা শুরু
গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ শিশু মুসা এখন আশার আলো হয়ে উঠেছে তার পরিবার ও চিকিৎসকদের জন্য। গুলিবিদ্ধ হওয়ার প্রায় তিন মাস পর, শিশুটি এখন চোখ খুলছে, হাত-পা নাড়াচ্ছে এবং সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার ফলে তার শারীরিক অবস্থা উন্নতি হয়েছে।
এদিকে, তার পরিবারের সদস্য শাহরিয়ার মাহমুদ ইয়ামিন, যিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য, শনিবার (১৬ নভেম্বর) মুসার অবস্থা নিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, যখন মুসার জীবন নিয়ে শঙ্কা ছিল, তখন সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শুরু হওয়ার পর তার অবস্থা কিছুটা উন্নতি হতে শুরু করেছে। সিঙ্গাপুরে পৌঁছানোর পর প্রথমে শিশুটির করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে, যা তার পরিবার এবং চিকিৎসকদের জন্য চরম উদ্বেগের সৃষ্টি করেছিল। তবে করোনা থেকে কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠে, মুসার চিকিৎসা শুরু হলে তার অবস্থায় দ্রুত উন্নতি দেখা গেছে।
ইয়ামিন বলেন, “আজ সকালের আপডেটে মুসা হাত-পা নাড়াচ্ছে, চোখ খুলছে এবং বসতে পারছে। এটি আমাদের কাছে এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। মুসা ছিল চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সবচেয়ে ছোট যোদ্ধা। একটি গুলি তার দাদির পেটের এক পাশ দিয়ে ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে মুসার মাথায় লাগে। তার দাদি ঘটনাস্থলেই মারা যান, কিন্তু মুসা এখনও মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে বেঁচে আছে।”
মুসার মা, নিশামনি, জানিয়েছেন যে এখন তার ছেলের লাইফ সাপোর্ট লাগছে না। সে নিজের থেকে কিছুটা হাত-পা নাড়াতে পারছে, চোখ খুলে তাকাচ্ছে, যদিও তার দৃষ্টি এখনও অর্থপূর্ণ নয়। “অক্সিজেনের উপর ছিল, কিন্তু এখন সে একটু একটু করে সাড়া দিচ্ছে,” বলেন নিশামনি।
এদিকে, চিকিৎসার খরচের ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য ইয়ামিন জানান, সরকারের প্রথম ধাপের সহায়তায় মুসার চিকিৎসার জন্য ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা পাঠানো হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে আরও ১ কোটি টাকা পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এছাড়াও, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন আরও তিনজন আহতের চিকিৎসার খরচ দেয়া হচ্ছে, এবং অন্যান্য আহতদের বিদেশে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
প্রসঙ্গত, মুসা ও তার দাদি মায়া ইসলাম গত ১৯ জুলাই ঢাকা রামপুরার মেরাদিয়া হাট এলাকার বাসার নিচে গুলিবিদ্ধ হন। মুসা তখন তার দাদির সঙ্গে আইসক্রিম কিনতে গিয়ে গুলির শিকার হয়। তার দাদি ঘটনাস্থলেই মারা যান, কিন্তু মুসা বেঁচে থাকে এবং এখন চিকিৎসা চলছে তার জীবন বাঁচানোর জন্য।