ধানের শীষে উত্তরাধিকারিদের দৌড়
বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলের দ্বিতীয় প্রজন্মের বেশ কয়েকজন নেতা। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটি ২৩৭ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে—যার মধ্যে রয়েছেন অভিজ্ঞ ও নতুন মুখের মিশেল।
পঞ্চগড়-১ আসনে সাবেক স্পিকার জমিরউদ্দিন সরকারের ছেলে মোহাম্মদ নওশাদ জমির, নাটোর-১ আসনে প্রয়াত প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমান পটলের মেয়ে ফারজানা শারমিন পুতুল, কুষ্টিয়া-২ আসনে সাবেক এমপি আব্দুর রউফ চৌধুরীর ছেলে রাগীব রউফ চৌধুরী এবং যশোর-৩ আসনে সাবেক মন্ত্রী তারিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত প্রার্থী হয়েছেন।
ঢাকা-৪ আসনে সাবেক এমপি সালাউদ্দিন আহমেদের ছেলে তানভীর আহমেদ রবিন, আর ঢাকা-৬ আসনে অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ধানের শীষ প্রতীকে।
ফরিদপুর-২ আসনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সাবেক মন্ত্রী কে এম ওবায়দুর রহমানের মেয়ে, আবারও প্রার্থী হয়েছেন। ফরিদপুর-৩ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মেয়ে চৌধুরী নায়াব ইউসুফ।
মৌলভীবাজার-৩ আসনে প্রার্থী হয়েছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের ছেলে নাসের রহমান। চট্টগ্রাম অঞ্চলেও রয়েছে রাজনৈতিক পরিবারগুলোর উত্তরাধিকার:
চট্টগ্রাম-৫ আসনে মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের ছেলে মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম-৭ আসনে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী, এবং চট্টগ্রাম-১৪ আসনে জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী বাপ্পা প্রার্থী হয়েছেন।
গাজীপুর-৪ আসনে সাবেক মন্ত্রী আ স ম হান্নান শাহর ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজ, মানিকগঞ্জ-২ আসনে শামসুল ইসলাম খানের ছেলে মঈনুল ইসলাম খান, এবং ময়মনসিংহ-৯ আসনে আনওয়ারুল হোসেন খানের ছেলে ইয়াসের খান চৌধুরী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছেন।
শেরপুর-৩ আসনে সাবেক এমপি সিরাজুল হকের ছেলে মাহমুদুল হক রুবেল, শেরপুর-২ আসনে সাবেক হুইপ জাহেদ আলী চৌধুরীর ছেলে ইঞ্জিনিয়ার ফাহিম চৌধুরী, আর শেরপুর-১ আসনে হযরত আলীর মেয়ে ও চিকিৎসক সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা প্রার্থী হয়েছেন।
এ ছাড়া ঝিনাইদহ-৩ আসনে শহিদুল ইসলাম মাস্টারের ছেলে মেহেদী হাসান, গাজীপুর-২ আসনে সাবেক মেয়র আব্দুল মান্নানের ছেলে এম মঞ্জুরুল করিম রনি, এবং পিরোজপুর-২ আসনে সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম মঞ্জুরের ছেলে আহমেদ সোহেল মঞ্জু সুমন ধানের শীষের প্রার্থী হয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, প্রয়াত ও প্রবীণ নেতাদের উত্তরসূরিদের অন্তর্ভুক্তি বিএনপির নির্বাচনী প্রচারণায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, “যে নেতা প্রয়াত, তার প্রভাব এলাকায় থেকেই যায়। তার সন্তান যদি যোগ্য হয়, দল অবশ্যই তাকে মূল্যায়ন করবে।”
জ্যেষ্ঠ নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “আমরা প্রার্থীদের বংশপরিচয় নয়, তাদের কর্মকাণ্ড ও জনপ্রিয়তা বিবেচনা করেছি।”
তরুণ প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিত মন্তব্য করেন, “এই তালিকায় নতুনদের যেমন সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তেমনি অভিজ্ঞদেরও রাখা হয়েছে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশায়।”














