ঢাকা ০১:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ১১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কলাগাছের ভেলায় ভাসমান বীজতলা: খুলনার কৃষকের সফল উদ্যোগ

মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা::

ছবি: সংগৃহীত

খুলনার উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষিজীবীরা অতিবৃষ্টি, নদী ভাঙন, লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতায় নাকাল। টানা বর্ষণে খুলনায় ফসল, সবজি ও আমনের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৩ হাজার অধিক কৃষকের।

তবে পাইকগাছা উপজেলার নোয়াকাটা গ্রামের কৃষক রোকেয়া পারভীন ও দেবর আব্দুল কুদ্দুস কলাগাছ, বাঁশ ও মাটি ব্যবহার করে ভাসমান ধানের বীজতলা তৈরি করে সফলতা দেখিয়েছেন। চলতি আমন মৌসুমে সর্বাধিক বৃষ্টিতে কয়েক দফায় বীজ নষ্ট হওয়া সত্ত্বেও তাদের ভাসমান বীজতলায় একটিও বীজ নষ্ট হয়নি। মাত্র ১৫ দিনে চারা রোপণের মতো বৃদ্ধি পেয়েছে।

রোকেয়া পারভীন বলেন, “আগে প্রায় ১০০ কেজি বীজ নষ্ট হয়েছিল। কলার ভেলায় বীজ ফেলার পর কোন বীজ নষ্ট হয়নি। এখন আশপাশের কৃষকরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন।”

দুর্যোগের সময় ভাসমান বীজতলার মাধ্যমে কৃষকরা আর্থিক ক্ষতি কমাতে এবং ধান চাষে সময়মতো রোপণ করতে পারবেন। পাইকগাছা ক্লাইমেট জাস্টিস ফোরামের সভাপতি অধ্যক্ষ রমেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “এ উদ্ভাবনী উদ্যোগ বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবেলায় আশাব্যঞ্জক এবং অনুকরণীয়। কৃষক বারবার বীজ কিনতে হবেনা এবং মৌসুমের শুরুতে ধান চাষ করতে পারবেন।”

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ৫ জুলাই থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত টানা বৃষ্টির কারণে ৫৭৫ হেক্টর বীজতলার মধ্যে ১০৬ হেক্টর আমনের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৫৩ হেক্টর পাইকগাছায়। খুলনায় ২০,৮৭০ হেক্টরের ফসলের মধ্যে ৮৪৮ হেক্টর সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৭ কোটি ৬৫ লাখ ৯৭ হাজার টাকা।

উপপরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, “কৃষকের ঝুঁকি কমাতে উঁচু স্থানে বা ভেলা বা বিকল্পভাবে বীজতলার ব্যবস্থা করা গুরুত্বপূর্ণ।”

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৮:২৫:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫
৫২২ বার পড়া হয়েছে

কলাগাছের ভেলায় ভাসমান বীজতলা: খুলনার কৃষকের সফল উদ্যোগ

আপডেট সময় ০৮:২৫:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫

খুলনার উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষিজীবীরা অতিবৃষ্টি, নদী ভাঙন, লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতায় নাকাল। টানা বর্ষণে খুলনায় ফসল, সবজি ও আমনের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৩ হাজার অধিক কৃষকের।

তবে পাইকগাছা উপজেলার নোয়াকাটা গ্রামের কৃষক রোকেয়া পারভীন ও দেবর আব্দুল কুদ্দুস কলাগাছ, বাঁশ ও মাটি ব্যবহার করে ভাসমান ধানের বীজতলা তৈরি করে সফলতা দেখিয়েছেন। চলতি আমন মৌসুমে সর্বাধিক বৃষ্টিতে কয়েক দফায় বীজ নষ্ট হওয়া সত্ত্বেও তাদের ভাসমান বীজতলায় একটিও বীজ নষ্ট হয়নি। মাত্র ১৫ দিনে চারা রোপণের মতো বৃদ্ধি পেয়েছে।

রোকেয়া পারভীন বলেন, “আগে প্রায় ১০০ কেজি বীজ নষ্ট হয়েছিল। কলার ভেলায় বীজ ফেলার পর কোন বীজ নষ্ট হয়নি। এখন আশপাশের কৃষকরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন।”

দুর্যোগের সময় ভাসমান বীজতলার মাধ্যমে কৃষকরা আর্থিক ক্ষতি কমাতে এবং ধান চাষে সময়মতো রোপণ করতে পারবেন। পাইকগাছা ক্লাইমেট জাস্টিস ফোরামের সভাপতি অধ্যক্ষ রমেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “এ উদ্ভাবনী উদ্যোগ বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবেলায় আশাব্যঞ্জক এবং অনুকরণীয়। কৃষক বারবার বীজ কিনতে হবেনা এবং মৌসুমের শুরুতে ধান চাষ করতে পারবেন।”

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ৫ জুলাই থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত টানা বৃষ্টির কারণে ৫৭৫ হেক্টর বীজতলার মধ্যে ১০৬ হেক্টর আমনের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৫৩ হেক্টর পাইকগাছায়। খুলনায় ২০,৮৭০ হেক্টরের ফসলের মধ্যে ৮৪৮ হেক্টর সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৭ কোটি ৬৫ লাখ ৯৭ হাজার টাকা।

উপপরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, “কৃষকের ঝুঁকি কমাতে উঁচু স্থানে বা ভেলা বা বিকল্পভাবে বীজতলার ব্যবস্থা করা গুরুত্বপূর্ণ।”