ঢাকা ১০:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বকশীগঞ্জে দশানী নদীতে অবৈধ বাঁধ, পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে শত শত বিঘা জমির ধান

জাকিরুল ইসলাম,জামালপুর::

জামালপুরের বকশীগঞ্জে দশানী নদীতে অবৈধভাবে দুটি বাঁধ নির্মাণের ফলে তিনটি ইউনিয়নের শত শত বিঘা জমির পাকা বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। একই সঙ্গে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে দশানী নদীও।

স্থানীয়রা জানান, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়ন ও বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর ও সাধুরপাড়া ইউনিয়নের বুক চিরে প্রবাহিত পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা দশানী নদীতে দুই জায়গায় আড়াআড়ি বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এতে নদীর স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে উজানে কৃত্রিম বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সাধুরপাড়া, মেরুরচর ও বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রামের শত শত বিঘা জমির ধান তলিয়ে গেছে। পানির নিচ থেকে ডুবে ডুবে ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নদী ভাঙন রোধে কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে বাঁধ নির্মাণ করে নদীর প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছেন। পরে পাল্টা বাঁধ তৈরি হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে।

সাবেক শিক্ষক গোলাম কিবরিয়া মনু বলেন, ‘দ্রুত বাঁধ দুটি কেটে না দিলে ফসল হারানোর পাশাপাশি দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতার আশঙ্কা রয়েছে।’

সাবেক ইউপি সদস্য গাজী সহিজল হক বলেন, ‘নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হওয়ায় পতিপথ পরিবর্তন হয়ে নতুন করে নদী সৃষ্টি হতে পারে, যা এলাকা ও কৃষির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।’

বকশীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, ‘এভাবে বাঁধ দিয়ে নদীর প্রবাহ বন্ধ করলে আগামীতে আমণ চাষও ব্যাহত হবে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’

বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘দশানী নদীতে অবৈধ বাঁধ নির্মাণের ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পানি প্রবাহ বন্ধ করা ফৌজদারি অপরাধ। যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং দ্রুত বাঁধ দুটি অপসারণ করা হবে।’

ভুক্তভোগী এলাকাবাসী দ্রুত বাঁধ অপসারণ করে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৩:৩১:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
৫১৫ বার পড়া হয়েছে

বকশীগঞ্জে দশানী নদীতে অবৈধ বাঁধ, পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে শত শত বিঘা জমির ধান

আপডেট সময় ০৩:৩১:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

জামালপুরের বকশীগঞ্জে দশানী নদীতে অবৈধভাবে দুটি বাঁধ নির্মাণের ফলে তিনটি ইউনিয়নের শত শত বিঘা জমির পাকা বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। একই সঙ্গে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে দশানী নদীও।

স্থানীয়রা জানান, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়ন ও বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর ও সাধুরপাড়া ইউনিয়নের বুক চিরে প্রবাহিত পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা দশানী নদীতে দুই জায়গায় আড়াআড়ি বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এতে নদীর স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে উজানে কৃত্রিম বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সাধুরপাড়া, মেরুরচর ও বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রামের শত শত বিঘা জমির ধান তলিয়ে গেছে। পানির নিচ থেকে ডুবে ডুবে ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নদী ভাঙন রোধে কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে বাঁধ নির্মাণ করে নদীর প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছেন। পরে পাল্টা বাঁধ তৈরি হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে।

সাবেক শিক্ষক গোলাম কিবরিয়া মনু বলেন, ‘দ্রুত বাঁধ দুটি কেটে না দিলে ফসল হারানোর পাশাপাশি দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতার আশঙ্কা রয়েছে।’

সাবেক ইউপি সদস্য গাজী সহিজল হক বলেন, ‘নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হওয়ায় পতিপথ পরিবর্তন হয়ে নতুন করে নদী সৃষ্টি হতে পারে, যা এলাকা ও কৃষির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।’

বকশীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, ‘এভাবে বাঁধ দিয়ে নদীর প্রবাহ বন্ধ করলে আগামীতে আমণ চাষও ব্যাহত হবে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’

বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘দশানী নদীতে অবৈধ বাঁধ নির্মাণের ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পানি প্রবাহ বন্ধ করা ফৌজদারি অপরাধ। যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং দ্রুত বাঁধ দুটি অপসারণ করা হবে।’

ভুক্তভোগী এলাকাবাসী দ্রুত বাঁধ অপসারণ করে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।