পঞ্চগড় চিনিকল মাঠে জামায়াতে ইসলামীর গণসমাবেশ
পঞ্চগড়ে নৌকাডুবির ঘটনায় নিহত ৭২ জনের পরিবারকে নিজেদের পরিবারের সদস্য হিসেবে ধারণ করার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, “যতদিন বেঁচে থাকি, সেই অনুভূতি নিয়ে বেঁচে থাকব ইনশাল্লাহ।”
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, “কিসের সংখ্যালঘু আর কিসের সংখ্যাগুরু। এদেশে জন্ম নেওয়া প্রতিটি মানুষই এই দেশের গর্বিত নাগরিক। আমরা ধর্ম বা দলের ভিত্তিতে নাগরিকদের ভাগ করার পক্ষে নই। অতীতের স্বৈরাচারী শাসকরা জাতিকে বিভক্ত করেছে। কিন্তু ঐক্যবদ্ধ না থাকলে জাতি সম্মানের সাথে বিশ্ব দরবারে দাঁড়াতে পারবে না। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও আমাদের বিভক্ত রাখা হয়েছে। আমরা স্পষ্ট ঘোষণা দিচ্ছি, আমরা কোনো মেজরিটি বা মাইনরিটি মানি না।”
বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পঞ্চগড় চিনিকল মাঠে আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন। এসময় পঞ্চগড় জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ইকবাল হুসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় পঞ্চগড় জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি, খেলাফত মজলিস পঞ্চগড়ের সভাপতি মীর মোর্শেদ তুহিন, বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট পার্টির সভাপতি মাসুদুর রহমান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাপা)-এর সভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান, জামায়াতে ইসলামের কেন্দ্রীয়, আঞ্চলিক ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ সনাতন ধর্মাবলম্বী রতন চন্দ্র রায় বক্তব্য রাখেন।
জনসভায় যোগ দিতে সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মী ও সমর্থকরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমবেত হন। জেলার বাইর থেকেও নেতাকর্মী ও সমর্থকদের জনসভায় অংশ নিতে দেখা যায়।
২০২২ সালের পঞ্চগড়ের ভয়াবহ নৌকাডুবির ঘটনায় নিহত হিন্দু সম্প্রদায়ের ৭২ জনের পরিবারের উদ্দেশ্যে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “তোমাদেরকে আমরা আমাদের পরিবারের সদস্য হিসেবে গ্রহণ করলাম। যতদিন বেঁচে থাকব, সেই অনুভূতি নিয়েই থাকব ইনশাল্লাহ। আমরা বাংলাদেশকে মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আমরা আর গডফাদার, গডমাদার, মাফিয়া তন্ত্র কিংবা ফ্যাসিবাদী বাংলাদেশ দেখতে চাই না।”
তিনি আরও বলেন, “বিশ্বের সকল দেশ একই সভার সদস্য। ভারত আমাদের প্রতিবেশী, আমরা তাদের কষ্ট দিতে চাই না। তবে আমাদের উপর যদি কোনো সম্মানহানিকর কিছু চাপিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে দেশের স্বার্থে আমরা কঠোর ভূমিকা পালন করব। আমরা বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য হব।”
বক্তব্যের শেষ দিকে তিনি দেশ গঠনের কাজে সবাইকে পাশে থাকার আহ্বান জানান এবং সকলের ভালোবাসা ও সমর্থন চান। এরপর তিনি ডোমারের উদ্দেশ্যে রওনা হন।