ঢাকা ০৫:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকার পথে কুয়েটের ৮০ শিক্ষার্থী, প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ কাল

মোঃ রবিউল হোসেন খান ; খুলনা::

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাসুদ ও প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শরিফুল ইসলামের অপসারণসহ ছয় দফা দাবি নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন ৮০ জন শিক্ষার্থী। রোববার সকাল ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে তাদের সাক্ষাৎ হওয়ার কথা রয়েছে।

আজ সকাল ৮টায় দুটি বাসে করে শিক্ষার্থীরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। যাত্রার সময় তাদের মাথা ও চোখে লাল কাপড় বাঁধা ছিল। যাত্রার আগে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা জানান, “আমরা ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাহীন। এজন্য আমাদের দাবি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করবো। এরপর নিরাপদ জায়গায় চলে যাব। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা ফিরবো না। আমাদের অনলাইন কার্যক্রম চলবে।”

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ভিসিসহ কিছু শিক্ষক দাবি করেছেন যে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তারা বলেন, “হামলাকারীরা চিহ্নিত হলেও মামলায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, বরং অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। আমরা রক্তাক্ত কুয়েট প্রদর্শনীতে হামলাকারীদের ছবি ও পরিচয় প্রকাশ করেছি, কিন্তু কুয়েট ছাত্রদল ও বিএনপির কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে মনে হচ্ছে, কুয়েট প্রশাসনের ভূমিকাই প্রশ্নবিদ্ধ।”

এর আগে শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে এক চিঠি পাঠান। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের ১১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত হয়। তবে ছাত্রদল ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করতে চাইলে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা ছাত্রদলের ফরম বিতরণের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ মিছিলের ডাক দেন। সেই সময় ছাত্রদল কর্মীরা মিছিলে এসে ধাক্কা দিয়ে শিক্ষার্থীদের হুমকি দেয়, যা উত্তেজনার জন্ম দেয়। এরপর ছাত্রদল ও স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়, যেখানে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই হামলায় প্রশাসন কোনো নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি।

শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন, যার মধ্যে প্রধান দাবিগুলো হলো, ১. ক্যাম্পাসে রাজনীতিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা। ২.ভিসি ও প্রো-ভিসির অপসারণ। ৩. সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। ৪. সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ৫. হামলার ঘটনায় চিহ্নিত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ। ৬. শিক্ষার্থীদের দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন।

শিক্ষার্থীরা দাবি পূরণের জন্য প্রশাসনকে পর্যাপ্ত সময় দিলেও তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে তারা বাধ্য হয়ে প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১০:৩৯:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
৫১০ বার পড়া হয়েছে

ঢাকার পথে কুয়েটের ৮০ শিক্ষার্থী, প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ কাল

আপডেট সময় ১০:৩৯:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাসুদ ও প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শরিফুল ইসলামের অপসারণসহ ছয় দফা দাবি নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন ৮০ জন শিক্ষার্থী। রোববার সকাল ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে তাদের সাক্ষাৎ হওয়ার কথা রয়েছে।

আজ সকাল ৮টায় দুটি বাসে করে শিক্ষার্থীরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। যাত্রার সময় তাদের মাথা ও চোখে লাল কাপড় বাঁধা ছিল। যাত্রার আগে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা জানান, “আমরা ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাহীন। এজন্য আমাদের দাবি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করবো। এরপর নিরাপদ জায়গায় চলে যাব। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা ফিরবো না। আমাদের অনলাইন কার্যক্রম চলবে।”

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ভিসিসহ কিছু শিক্ষক দাবি করেছেন যে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তারা বলেন, “হামলাকারীরা চিহ্নিত হলেও মামলায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, বরং অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। আমরা রক্তাক্ত কুয়েট প্রদর্শনীতে হামলাকারীদের ছবি ও পরিচয় প্রকাশ করেছি, কিন্তু কুয়েট ছাত্রদল ও বিএনপির কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে মনে হচ্ছে, কুয়েট প্রশাসনের ভূমিকাই প্রশ্নবিদ্ধ।”

এর আগে শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে এক চিঠি পাঠান। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের ১১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত হয়। তবে ছাত্রদল ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করতে চাইলে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা ছাত্রদলের ফরম বিতরণের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ মিছিলের ডাক দেন। সেই সময় ছাত্রদল কর্মীরা মিছিলে এসে ধাক্কা দিয়ে শিক্ষার্থীদের হুমকি দেয়, যা উত্তেজনার জন্ম দেয়। এরপর ছাত্রদল ও স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়, যেখানে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই হামলায় প্রশাসন কোনো নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি।

শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন, যার মধ্যে প্রধান দাবিগুলো হলো, ১. ক্যাম্পাসে রাজনীতিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা। ২.ভিসি ও প্রো-ভিসির অপসারণ। ৩. সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। ৪. সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ৫. হামলার ঘটনায় চিহ্নিত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ। ৬. শিক্ষার্থীদের দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন।

শিক্ষার্থীরা দাবি পূরণের জন্য প্রশাসনকে পর্যাপ্ত সময় দিলেও তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে তারা বাধ্য হয়ে প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/checkpostcom/public_html/wp-includes/functions.php on line 5464