বিরলে ফুল চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা
ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সামনে রেখে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার কৃষকরা ফুল চাষ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ সময়টিতে ফুলের চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা আশানুরূপ লাভের প্রত্যাশা করছেন।
দিনাজপুরে ফুলের চাহিদা মেটাতে যশোর, কুষ্টিয়া ও অন্যান্য জেলা থেকে ফুল আমদানি করা হলেও, স্থানীয় কৃষকরা এখন বানিজ্যিকভাবে ফুল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বিশেষ করে বিরল উপজেলার কাজিপাড়া গ্রামের তিনজন কৃষক এক থেকে দেড় বছর আগে বানিজ্যিকভাবে ফুল চাষ শুরু করেন এবং তারা ইতোমধ্যে ভালো ফলন পেতে শুরু করেছেন। তাদের সফলতা দেখে এলাকার অন্যান্য কৃষকরাও ফুল চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
এ বছর গোলাপ, রজনীগন্ধা ও গাদা ফুলের চাষ ভালো হওয়ায় কৃষকরা অত্যন্ত সন্তুষ্ট। ইতোমধ্যে তাদের বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ শুরু হয়েছে এবং বাজারে ভালো দামে বিক্রিও হচ্ছে। কৃষকরা জানান, সারা বছরই ফুলের চাহিদা থাকলেও ফেব্রুয়ারি মাসে বিশেষ করে ১৪ ফেব্রুয়ারি (ভালোবাসা দিবস) ও ২১ ফেব্রুয়ারি (আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস) উপলক্ষে এর চাহিদা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।
কৃষক সুলতান জানান, অন্যান্য ফসলের তুলনায় ফুল চাষ লাভজনক। তিনি বলেন, “কয়েক বছর ধরে ফুল চাষ করছি, এখনো কোনোবার লোকসান হয়নি। তাই আগামীতে ফুল চাষের পরিসর আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।” পাশাপাশি ফুলের বাগান দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে আসছেন, যা কৃষকদের উৎসাহ আরও বাড়িয়ে তুলছে।
বিরল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা হাসান ইমাম বলেন, “এই অঞ্চলের মাটি ফুল চাষের জন্য বেশ উপযোগী। আমরা কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহায়তা দিচ্ছি। বর্তমানে কাজিপাড়া গ্রামে প্রায় ৩ একর জমিতে বানিজ্যিকভাবে ফুল চাষ করা হচ্ছে এবং কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।” তিনি আরও জানান, ফুল চাষের প্রসার ঘটলে আমদানির উপর নির্ভরতা কমবে এবং স্থানীয় অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে।
স্থানীয় কৃষি দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, কৃষকদের উৎসাহ দিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ এবং সহায়তা প্রদান অব্যাহত রয়েছে। ফুল চাষের প্রসার ঘটলে দিনাজপুর অঞ্চলে এটি একটি সম্ভাবনাময় শিল্প হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।