ঢাকা ১১:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চিরিরবন্দরে ৭ বছরেও শেষ হয়নি সেতুর নির্মাণ কাজ, চরম ভোগান্তি

প্রসেনজিৎ চন্দ্র শর্মা,দিনাজপুর::

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে দীর্ঘ সাত বছরেও কাঁকড়া নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ শেষ হয়নি। এতে স্থানীয়দের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ফলে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

চিরিরবন্দর উপজেলার ভিয়াইল ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কাঁকড়া নদীর উপর এই সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। নদীর পশ্চিম পাশে ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিস, ইউপি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র এবং পূর্বদিকে উপজেলা সদরের অবস্থান। ফলে ইউনিয়নের পূর্ব পাশে বসবাসকারী বাসিন্দাদের সরকারি সেবা পেতে ৮-১০ কিলোমিটার ঘুরতে হয়। বর্ষা মৌসুমে নৌকা এবং শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকোই এখানকার প্রায় ১০টি গ্রামের মানুষের পারাপারের একমাত্র মাধ্যম।

২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে ১৭৫ মিটার দৈর্ঘ্যের আরসিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের জন্য ১৪ কোটি ৮৩ লাখ ৬৪ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘সুরমা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’ কাজের দায়িত্ব পেলেও ২০১৯ সালের এপ্রিলের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেছে। ২০২৩ সালে নতুন করে কাজ শুরু হলেও ১৫ জুলাই সেতুর চার নম্বর ক্রস গার্ডারটি নদীতে ভেঙে পড়ে। এরপর দুই দফা সময় বাড়ানো হলেও কাজ শেষ হয়নি। ২০২৫ সালেও সেতুর প্রায় ৪০ শতাংশ কাজ অসমাপ্ত রয়ে গেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিনেও সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় তাদের ভোগান্তি বেড়েই চলেছে।

পারভীন আক্তার নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “হামার ভোগান্তির শ্যাষ নাই। কোনো জরুরি দরকারে নদী পার হতে চাইলে নৌকার জন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। অসুস্থ রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে হলে অনেক দূর ঘুরে যেতে হয়।”

ভিয়াইল গ্রামের রিকশাচালক সুবল রায় বলেন, “শীতকালে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হওয়া গেলেও বর্ষায় খুব কষ্ট হয়। দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ থাকায় আমাদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।”

স্থানীয় বাসিন্দা আউয়াল হোসেন বলেন, “সেতুর কাজ শুরু হলে আমরা ভেবেছিলাম কষ্টের দিন শেষ হবে। কিন্তু উল্টো বেশি ভোগান্তি হচ্ছে। ঠিকাদার মালামাল নিয়ে চলে গেছে, এখন নতুন করে কাজ শুরু হলেও কবে শেষ হবে জানি না।”

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. মাসুদার রহমান জানান, নতুন করে টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হলেই দ্রুত সেতুর অবশিষ্ট কাজ শুরু হবে।

স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত সেতুটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে জনদুর্ভোগ লাঘব করা হোক। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আরও কার্যকরী ভূমিকা নেওয়া উচিত বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৫:৩২:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
৫০৩ বার পড়া হয়েছে

চিরিরবন্দরে ৭ বছরেও শেষ হয়নি সেতুর নির্মাণ কাজ, চরম ভোগান্তি

আপডেট সময় ০৫:৩২:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে দীর্ঘ সাত বছরেও কাঁকড়া নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ শেষ হয়নি। এতে স্থানীয়দের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ফলে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

চিরিরবন্দর উপজেলার ভিয়াইল ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কাঁকড়া নদীর উপর এই সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। নদীর পশ্চিম পাশে ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিস, ইউপি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র এবং পূর্বদিকে উপজেলা সদরের অবস্থান। ফলে ইউনিয়নের পূর্ব পাশে বসবাসকারী বাসিন্দাদের সরকারি সেবা পেতে ৮-১০ কিলোমিটার ঘুরতে হয়। বর্ষা মৌসুমে নৌকা এবং শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকোই এখানকার প্রায় ১০টি গ্রামের মানুষের পারাপারের একমাত্র মাধ্যম।

২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে ১৭৫ মিটার দৈর্ঘ্যের আরসিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের জন্য ১৪ কোটি ৮৩ লাখ ৬৪ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘সুরমা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’ কাজের দায়িত্ব পেলেও ২০১৯ সালের এপ্রিলের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেছে। ২০২৩ সালে নতুন করে কাজ শুরু হলেও ১৫ জুলাই সেতুর চার নম্বর ক্রস গার্ডারটি নদীতে ভেঙে পড়ে। এরপর দুই দফা সময় বাড়ানো হলেও কাজ শেষ হয়নি। ২০২৫ সালেও সেতুর প্রায় ৪০ শতাংশ কাজ অসমাপ্ত রয়ে গেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিনেও সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় তাদের ভোগান্তি বেড়েই চলেছে।

পারভীন আক্তার নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “হামার ভোগান্তির শ্যাষ নাই। কোনো জরুরি দরকারে নদী পার হতে চাইলে নৌকার জন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। অসুস্থ রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে হলে অনেক দূর ঘুরে যেতে হয়।”

ভিয়াইল গ্রামের রিকশাচালক সুবল রায় বলেন, “শীতকালে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হওয়া গেলেও বর্ষায় খুব কষ্ট হয়। দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ থাকায় আমাদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।”

স্থানীয় বাসিন্দা আউয়াল হোসেন বলেন, “সেতুর কাজ শুরু হলে আমরা ভেবেছিলাম কষ্টের দিন শেষ হবে। কিন্তু উল্টো বেশি ভোগান্তি হচ্ছে। ঠিকাদার মালামাল নিয়ে চলে গেছে, এখন নতুন করে কাজ শুরু হলেও কবে শেষ হবে জানি না।”

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. মাসুদার রহমান জানান, নতুন করে টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হলেই দ্রুত সেতুর অবশিষ্ট কাজ শুরু হবে।

স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত সেতুটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে জনদুর্ভোগ লাঘব করা হোক। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আরও কার্যকরী ভূমিকা নেওয়া উচিত বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/checkpostcom/public_html/wp-includes/functions.php on line 5464