শিশুর মনের বিকাশের জন্য বই পড়ার কোন বিকল্প নেই
শিশুর মনের বিকাশের জন্য বই পড়ার বিকল্প নেই। বই পড়া শুধু ব্যক্তিগত উন্নতির পথই নয়, এটি একটি জাতির আত্মবিশ্বাস এবং সভ্যতার মাপকাঠি। বই পড়া দ্বারা শিশুর মন খোলামেলা এবং সৃজনশীল হয়, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনে সাহায্য করে। বিশেষ করে সাহিত্য বইগুলিই শিশুর মনের বিকাশে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে, কারণ এসব বই মানুষের জীবনের সার্বিক চিত্র তুলে ধরে এবং মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি উন্নত করে।
বই পড়ার জন্য অবশ্যই একটি পরিবেশের প্রয়োজন, যা লাইব্রেরি পূর্ণ করতে পারে। যেমন একজন মানুষের শারীরিক স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে হাসপাতাল প্রয়োজন, তেমনি মনের বিকাশের জন্যও লাইব্রেরি অপরিহার্য। আমাদের সমাজে অনেকেই বই পড়তে আগ্রহী নন, বিশেষত প্রযুক্তির যুগে। মোবাইল, ট্যাবলেট, কম্পিউটার ব্যবহার করতে করতে আমরা বই পড়ার অভ্যাস হারিয়ে ফেলছি। এতে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের শৈশব কেটেছে ডিজিটাল দুনিয়ায়, বইয়ের দুনিয়া অনেকটাই পিছিয়ে গেছে।
তবে এই সমস্যা থেকে উত্তরণের পথও রয়েছে। যদি আমরা বাবা-মা হিসেবে বই পড়ার প্রতি আগ্রহী হই, তবে আমাদের সন্তানরা আমাদের থেকেই অনুপ্রাণিত হবে। বই পড়ার অভ্যাস তাদের মধ্যে গড়ে উঠবে, এবং তারা নিজেরাই একদিন বইয়ের মাধ্যমে জ্ঞান আহরণে অভ্যস্ত হবে। ডিভাইসের বদলে সন্তানদের বই পড়াতে উৎসাহিত করুন। শিশুদের ঘুমানোর আগে গল্পের বই পড়ে শোনান। এতে তারা বইয়ের প্রতি আগ্রহী হবে এবং একদিন বই তাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠবে।
আধুনিক প্রজন্ম প্রযুক্তির প্রতি আকৃষ্ট হলেও, তাদের মানসিক এবং জ্ঞানিক উন্নতির জন্য বই পড়া অপরিহার্য। তাই আমাদের উচিত, শিশুদের মধ্যে বই পড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়ানো এবং তাদের জীবনকে একটি শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো। বইয়ের মতো বন্ধু পৃথিবীতে আর কিছু নেই, এবং এটি তাদের মনে সাহস, জ্ঞান এবং মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করবে।