চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার কিরণগঞ্জ সীমান্তে জমির ফসল কাটা নিয়ে বাংলাদেশি ও ভারতীয় নাগরিকদের সংঘর্ষের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
শনিবার দুপুরে জমি ও গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের ভূখণ্ডে ভারতীয় নাগরিকদের প্রবেশ এবং গাছ কাটার প্রতিবাদ জানাতে স্থানীয় বাংলাদেশি কৃষকরা জড়ো হন। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে বিএসএফ সদস্যরা টিয়ার সেল, সাউন্ড গ্রেনেড এবং ককটেল নিক্ষেপ করে। এতে তিনজন বাংলাদেশি আহত হন এবং সীমান্ত এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
বিকেলে মহানন্দা ব্যাটালিয়নের ৫৯ বিজিবি ও বিএসএফ-এর মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ৫৯ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া ও বিএসএফ ১১৯ ব্যাটালিয়ন কমান্ড্যান্ট সুরাজ সিং উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বিএসএফ সংঘর্ষের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে এবং ভারতীয় নাগরিকদের সীমান্ত থেকে সরিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
এরপর থেকে সীমান্তে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে শনিবারের সংঘর্ষে বাংলাদেশের কৃষকদের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সরিষা, ভুট্টা, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ফসল পায়ের চাপ এবং উত্তেজিত জনতার কারণে নষ্ট হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মাসুদ রানা বলেন, আমার ভুট্টা ক্ষেতের ওপর দিয়ে কয়েকশ’ মানুষ হেঁটে যাওয়ায় সব ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। সেচ দিয়ে ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়ন মিয়া জানান, সীমান্তের উত্তেজনার কারণে ফসলের ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
মহানন্দা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, সীমান্তের পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক। তবে কৃষকদের ক্ষতির পরিমাণ বেশি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা জনগণকে সতর্ক করছি এবং বিজিবির নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
সীমান্তে উত্তেজনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে বিজিবি টহল এবং নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। স্থানীয় জনগণও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিজিবির সঙ্গে সহযোগিতা করছে।