কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের ক্ষতিপূরণ, গণহত্যার বিচারসহ পাঁচ দফা দাবিতে সুনামগঞ্জ জেলা শাখার গণ অধিকার পরিষদ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ আয়োজন করেছে।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শহরের শাপলা চত্ত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে আলফাত স্কয়ারে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণ অধিকার পরিষদ সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সাবেক সভাপতি মাওলানা আলী আসগর। সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী। সভায় বক্তব্য রাখেন, জেলা গণ অধিকার পরিষদ এর সাবেক সহ সভাপতি শাহাব উদ্দিন শিহাব, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুয়েব আহমেদ, সদর উপজেলা গণ অধিকার পরিষদ এর আহবায়ক মোশাহিদ মিল্টন, গণ অধিকার পরিষদ নেতা তিমন চৌধুরী, যুব অধিকার পরিষদ সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মোজাহিদ আলী খোকন প্রমুখ।

বক্তারা তাঁদের বক্তব্যে বলেন, গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড, ফ্যাসিবাদী সরকারের শেখ হাসিনার ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা তার ফাঁসি চাই। গণহত্যার দায়ে অভিযুক্তদের, বিশেষ করে গণহত্যাকারীদের দোষী সাব্যস্ত করে আন্তর্জাতিক আদালতে শাস্তি প্রদান করতে হবে। এই দেশে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই।

বক্তারা আরও বলেন, “কিছুদিন আগে যারা গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড ছিল, তাদেরকে গ্রেফতার করার পর জামিন দেওয়া হয়েছে। আমরা বলতে চাই, যারা ছাত্রজনতাকে হত্যা করেছে, যারা আমাদের ভাইদের ওপর গুলি করেছে, তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।”

গণহত্যায় জড়িতদের বিচার: জুলাই গণহত্যার সাথে জড়িত শেখ হাসিনা সহ সকল বিদেশে পলাতক ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা এবং গণহত্যার সাথে জড়িতদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা।

আহত ও শহীদদের ক্ষতিপূরণ: জুলাই-আগস্টের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিগত ১৬ বছরের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আহত, ক্ষতিগ্রস্ত ও শহীদদের সঠিক তালিকা তৈরি করে যথাযথ ক্ষতিপূরণ এবং চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।

রাষ্ট্র সংস্কার: গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষায় রাষ্ট্র সংস্কার এবং নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে কার্যকর সংস্কার নিশ্চিত করতে অভ্যুত্থানের অংশীজনদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন ও নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা।

অর্থ পাচার ও লুটপাটের বিচার: ফ্যাসিবাদের আমলে উন্নয়নের নামে লুটপাট ও অর্থ পাচারে জড়িতদের গ্রেফতার এবং বিচার নিশ্চিত করে তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা।

গুম-খুন ও ভূয়া নির্বাচনের বিচার: বিগত ১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট হাসিনার রেজিমে সংগঠিত গুম-খুন ও ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের ভূয়া নির্বাচনের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করা।

সমাবেশের শেষে মাওলানা আলী আসগর তাদের ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই পাঁচ দফা দাবি আদায়ে গণ অধিকার পরিষদ লড়াই চালিয়ে যাবে এবং শেষ পর্যন্ত জয়ী হবে।

সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা তাদের দাবি পূরণের জন্য এককাট্টা হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন।