ঢাকা ১২:৪৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লাখাই উপজেলায় রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন, আশাবাদী কৃষকরা

এম এ ওয়াহেদ লাখাই::

লাখাই উপজেলা চলতি রোপা আমন ধান মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় কৃষকরা বেশ আশাবাদী। প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত এবং জমিতে পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমন না থাকায় এ বছর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষকরা জানিয়েছেন, এ বছর তাদের আশা পূর্ণ হতে পারে, এবং এটি হতে পারে এযাবতকালের সেরা ফলন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর রোপা আমন মৌসুমে আবাদের লক্ষ্য ছিল ৪ হাজার ৯ শত হেক্টর জমি, তবে আবহাওয়া অনুকূল থাকার কারণে তা ছাড়িয়ে ৫ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এতে বিভিন্ন জাতের ধান যেমন ব্রিধান-১০৩, ৮৭, ৯০, ৭৫, ৪৯, ৩৯, ২২, ২৩ এবং বিনা ধান-৭, ১৭ সহ অন্যান্য জাতের ধান চাষ করা হয়েছে।

এ বছরের উৎপাদন নিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আশাবাদী। তারা জানিয়েছে, লাখাই উপজেলায় ২০ হাজার ৯৪৩ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হতে পারে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৭৫ কোটি টাকা। এছাড়া, স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৯ হাজার ১৯৫ মেট্রিক টন ধান উদ্বৃত্ত হবে, যা স্থানীয় বাজারে বিক্রির জন্য প্রস্তুত থাকবে।

সরজমিনে পরিদর্শন করে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ধান কাটা শুরুর প্রস্তুতি দেখা গেছে। করাব, সিংহগ্রাম, মুড়িয়াউক, বামৈ, এবং মোড়াকরি হাওর অঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, কিছু জমির ধান পাকা, কিছু আধাপাকা, এবং খুব শিগগিরই ধান কাটার কাজ শুরু হবে।

এ বিষয়ে মুড়িয়াউক গ্রামের কৃষক ফজলে রাব্বি জিসান, করাব গ্রামের শাহজাহান মিয়া, এবং ভাদিকারা গ্রামের মারাজ মিয়া জানিয়েছেন, “এ বছর আমাদের জমিতে আশানুরূপ ফলন হয়েছে, আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এক সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটা শুরু হবে।”

এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাহমুদুল হাসান মিজান বলেন, “লাখাইয়ে আমন ধান উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিভিন্ন প্রযুক্তি বিস্তার, রোগবালাই দমন এবং সার ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর রোগবালাই অনেকটাই কম। তবে মাঠে কিছু মাজরা এবং পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ ছিল, তা কাটিয়ে এখন ফলন বেশ ভালো হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এবারের সার্বিক ফসলের অবস্থা খুব ভালো, আশা করা যায় বড় কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবছর বাম্পার ফলন হবে।”

এদিকে, কৃষকরা আশাবাদী যে, যদি আকাশের খেলা এবং অন্যান্য পরিবেশগত বিপর্যয় না ঘটে, তবে লাখাই উপজেলা এ বছর সর্বোচ্চ ধান উৎপাদনে সফল হবে এবং কৃষকদের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও শক্তিশালী হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০২:১৯:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪
৫০৫ বার পড়া হয়েছে

লাখাই উপজেলায় রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন, আশাবাদী কৃষকরা

আপডেট সময় ০২:১৯:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

লাখাই উপজেলা চলতি রোপা আমন ধান মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় কৃষকরা বেশ আশাবাদী। প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত এবং জমিতে পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমন না থাকায় এ বছর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষকরা জানিয়েছেন, এ বছর তাদের আশা পূর্ণ হতে পারে, এবং এটি হতে পারে এযাবতকালের সেরা ফলন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর রোপা আমন মৌসুমে আবাদের লক্ষ্য ছিল ৪ হাজার ৯ শত হেক্টর জমি, তবে আবহাওয়া অনুকূল থাকার কারণে তা ছাড়িয়ে ৫ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এতে বিভিন্ন জাতের ধান যেমন ব্রিধান-১০৩, ৮৭, ৯০, ৭৫, ৪৯, ৩৯, ২২, ২৩ এবং বিনা ধান-৭, ১৭ সহ অন্যান্য জাতের ধান চাষ করা হয়েছে।

এ বছরের উৎপাদন নিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আশাবাদী। তারা জানিয়েছে, লাখাই উপজেলায় ২০ হাজার ৯৪৩ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হতে পারে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৭৫ কোটি টাকা। এছাড়া, স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৯ হাজার ১৯৫ মেট্রিক টন ধান উদ্বৃত্ত হবে, যা স্থানীয় বাজারে বিক্রির জন্য প্রস্তুত থাকবে।

সরজমিনে পরিদর্শন করে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ধান কাটা শুরুর প্রস্তুতি দেখা গেছে। করাব, সিংহগ্রাম, মুড়িয়াউক, বামৈ, এবং মোড়াকরি হাওর অঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, কিছু জমির ধান পাকা, কিছু আধাপাকা, এবং খুব শিগগিরই ধান কাটার কাজ শুরু হবে।

এ বিষয়ে মুড়িয়াউক গ্রামের কৃষক ফজলে রাব্বি জিসান, করাব গ্রামের শাহজাহান মিয়া, এবং ভাদিকারা গ্রামের মারাজ মিয়া জানিয়েছেন, “এ বছর আমাদের জমিতে আশানুরূপ ফলন হয়েছে, আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এক সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটা শুরু হবে।”

এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাহমুদুল হাসান মিজান বলেন, “লাখাইয়ে আমন ধান উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিভিন্ন প্রযুক্তি বিস্তার, রোগবালাই দমন এবং সার ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর রোগবালাই অনেকটাই কম। তবে মাঠে কিছু মাজরা এবং পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ ছিল, তা কাটিয়ে এখন ফলন বেশ ভালো হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এবারের সার্বিক ফসলের অবস্থা খুব ভালো, আশা করা যায় বড় কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবছর বাম্পার ফলন হবে।”

এদিকে, কৃষকরা আশাবাদী যে, যদি আকাশের খেলা এবং অন্যান্য পরিবেশগত বিপর্যয় না ঘটে, তবে লাখাই উপজেলা এ বছর সর্বোচ্চ ধান উৎপাদনে সফল হবে এবং কৃষকদের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও শক্তিশালী হবে।