রামপালে সাংবাদিক সুখময় ব্রহ্ম গ্রেফতার, নিন্দার ঝড় ও মুক্তির দাবি
বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় কথিত “ডেভিল হান্ট” অভিযানের অভিযোগে সাংবাদিক ও কলেজশিক্ষক সুখময় ব্রহ্ম (৫০) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাত ২টার দিকে রামপাল থানা পুলিশ তার ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় বাগেরহাটসহ বিভিন্ন উপজেলার সাংবাদিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। দ্রুত সুখময়ের মুক্তির দাবি জানিয়েছে প্রেসক্লাব রামপালসহ সাংবাদিক সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ।
জানা গেছে, দৈনিক জবাবদিহি পত্রিকার রামপাল প্রতিনিধি এবং প্রেসক্লাব রামপালের অর্থ সম্পাদক সুখময় ব্রহ্ম দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতা ও শিক্ষকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। রামপাল সদরের সাবেক এমপি তন্ময়ের এপিএস আখ্যা দিয়ে ডেভিল হান্টের সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, অভিযানের সময় বাসায় থাকা অবস্থায় সুখময় পুলিশের পরিচয় নিশ্চিত না হওয়ায় দরজা খুলতে দেরি করেন। পরে পুলিশ দরজা ভেঙে ফেলার হুমকি দিলে তিনি দরজা খোলেন। এ সময় তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল করা হয়।
পরবর্তীতে পুলিশ ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ সালের একটি পুরনো মামলায় (গুলিবর্ষণ ও গুলি উদ্ধারের ঘটনা) তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। প্রেসক্লাব রামপাল নেতৃবৃন্দ জানান, এ বিষয়ে রামপাল থানার ওসি আতিকুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ উপস্থাপন করতে পারেননি। ওসি শুধু জানান, “অনেক অভিযোগ আছে” এবং “নেতারা ফোনে তথ্য দিয়েছেন” তবে সুনির্দিষ্টভাবে কিছুই জানাননি।
প্রেসক্লাব রামপালের সভাপতি এম এ সবুর রানা জানান, সাংবাদিক সুখময়ের গ্রেফতার সম্পূর্ণ অন্যায় ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি বলেন, “সাংবাদিকদের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার বিরুদ্ধে এ ধরনের আচরণ স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর সরাসরি আঘাত।” প্রেসক্লাব রামপালের পক্ষ থেকে রামপাল থানার সাথে সকল যোগাযোগ বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার প্রতিবাদে রামপাল, বাগেরহাট সদর ও আশপাশের উপজেলার সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ জানান এবং দ্রুত সাংবাদিক সুখময়ের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে একগুচ্ছ কর্মসূচি গ্রহণ করেন। তারা দাবি করেন, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।