যেকোনো মূল্যে গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে : তারেক রহমান
যেকোনো মূল্যে গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার যাতে প্রতিষ্ঠিত হয় সে লক্ষ্য আমাদেরকে কাজ করতে হবে। আমরা যদি বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে পারি, তাহলে বাংলাদেশের মানুষ সর্বনাশের যেখাতে পৌঁছে গেছে সেখান থেকে আমরা তুলে আনতে পারবো। অতীতে বাংলাদেশে কিভাবে গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে, কিভাবে বাংলাদেশের মানুষের উপর অত্যাচার নির্যাতন হয়েছে আমরা দেখেছি ও শুনেছি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আমাদের বসে থাকলে চলবে না। আমাদেরকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে এবং সতর্ক থাকতে হবে, যাতে অযাচিত তর্ক-বিতর্ক করে জনগণ ও দেশের স্বার্থ থেকে দূরে সরে না যায়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি ব্যবস্থার দিকে নজর দেওয়া এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছিলেন। জনগণের সমর্থন পেলে বিএনপি অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করবে।
আজ ২৪ ফেব্রুয়ারি খুলনা মহানগর বিএনপি দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এ্যাড. শফিকুল আলম মনা এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক ডাকসু ভিপি ও সাবেক মন্ত্রী আমানউল্লাহ আমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাড. নিতাই রায় চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ ইসলাম অমিত, বিএনপি ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান শামিম, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সংগীত শিল্পী বেবি নাজনীনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে গোপন ব্যালটে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় খুলনা জেলা স্টেডিয়াম জিমনেশিয়াম অডিটোরিয়ামে। সভাপতি পদে এ্যাড. শফিকুল আলম মনা, সাধারণ সম্পাদক পদে শফিকুল আলম তুহিন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে যথাক্রমে শেখ সাদী, হাসানুর রশিদ চৌধুরী মিরাজ ও মাসুদ পারভেজ বাবু নির্বাচিত হয়েছেন।
দ্বিতীয় অধিবেশনে কাউন্সিলরদের গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। খুলনা মহানগর বিএনপির ৫ টি থানা ও ৩ ইউনিয়নের ৫০৫ জন কাউন্সিলরের ভোটে নির্বাচিত হন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মোট ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
সম্মেলন ঘিরে খুলনা মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে প্ল্যাকার্ড ও আলোকসজ্জা করা হয়। মহানগর বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিল্টন জানান, সম্মেলন সফল করতে ২১টি উপকমিটি কাজ করেছে।
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিপুল উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর খুলনা মহানগর বিএনপির ৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয় এবং ২০২২ সালের ১ মার্চ ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়েছিল। ইতোমধ্যে মহানগর বিএনপি ৩১ টি ওয়ার্ড, ৩ টি ইউনিয়ন ও ৫ টি থানার সম্মেলনের মাধ্যমে পুনর্গঠিত হয়েছে।
এই সম্মেলনের মাধ্যমে দীর্ঘ ১৬ বছর পর খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন সম্পন্ন হলো।