অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে যমুনা সার কারখানার কতৃপক্ষ কারখানায় উৎপাদিত ১ মেট্রিক টন নষ্ট-পচা সার বাদ দিয়ে শুধুমাত্র আমদানিকৃত সার সরবরাহ করেছে। যমুনা সার কারখানা থেকে নিম্নলিখিত ট্রাকের মাধ্যমে মোট ৫২ মেট্রিক টন সার সরবরাহ করা হয়, ঢাকা-মেট্র.ট ১৪-৭৮৫৭ ট্রাকে ১১ মেট্রিক টন, ঢাকা-মেট্র.ট ১৪-১৩০৪ ট্রাকে ১১ মেট্রিক টন, ময়মনসিংহ-ট ১১-০০৮৪ ট্রাকে ১০ মেট্রিক টন, টাঙ্গাইল-ট ০২-৮৫৮ ট্রাকে ১০ মেট্রিক টন, টাঙ্গাইল-ট ০২-৭৩৬ ট্রাকে ১০ মেট্রিক টন।
এই অনিয়মের ঘটনায় স্থানীয় অন্যান্য সার ডিলারদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা অভিযোগ করছেন, একজন নির্দিষ্ট ডিলারকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে মানসম্পন্ন সার সরবরাহ করা হয়েছে, যা অন্যদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সার ডিলার জানান, আওয়ামী লীগ সরকার শাসনামলেও প্রভাবশালী নেতারা একইভাবে যমুনা সার কারখানা থেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে সার উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। এখন বিএনপি নেতার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটছে, যা সার বিতরণ ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
একজন ডিলার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের মতো সাধারণ ডিলারদের ক্ষেত্রে কঠোর নিয়মকানুন আরোপ করা হলেও কিছু প্রভাবশালী ব্যবসায়ী নিয়ম ভেঙে তাদের সুবিধামতো সার নিয়ে যান। এটি সুস্পষ্ট বৈষম্য এবং অবৈধ সুবিধা প্রদান।
এ বিষয়ে যমুনা সার কারখানার বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের স্পেশাল ইনচার্জ হারুন-অর-রশিদ স্বীকার করেছেন যে, উপরস্থ কর্মকর্তার সুপারিশে নিয়মবহির্ভূতভাবে ৫টি ট্রাকে মোট ৫২ মেট্রিক টন সার সরবরাহ করা হয়েছে। তবে তিনি ওই ডিলারের নাম প্রকাশে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে যমুনা সার কারখানার ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) আব্দুল হামীম জানান, আমি বিষয়টি জানি না। তবে খোঁজ-খবর নিয়ে সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যমুনা সার কারখানায় এ ধরনের অনিয়ম চলতে থাকলে দেশের সার বিতরণ ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংকট তৈরি হতে পারে। নিয়ম বহির্ভূতভাবে একজন ব্যবসায়ীর কাছে বিপুল পরিমাণ সার সরবরাহ করা হলে অন্যান্য ডিলার ও কৃষকের জন্য সারের প্রাপ্যতা কমে যেতে পারে।
এ ঘটনায় সার ডিলার ও কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা দ্রুত বিষয়টির তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। তবে কারখানা কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ নেয়, তা এখন দেখার বিষয়।