মোহাম্মদপুরে কথিত সাংবাদিক শফিকুল বাশার ও ছেলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে কথিত ‘হলুদ সাংবাদিক’ শফিকুল বাশার ও তার ছেলে আরমান হোসেন রাজিবের বিরুদ্ধে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের নানা অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর দাবি, একসময় ডাকাতি ও হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি শফিকুল বাশার জেল থেকে মুক্তি পেয়ে সাংবাদিক পরিচয়ে নতুন করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করছেন।
স্থানীয় ভুক্তভোগীদের তথ্য অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। জেল খাটার পর ‘দৈনিক বর্তমান’ পত্রিকার একটি কার্ড ব্যবহার করে সাংবাদিক পরিচয় দেন এবং সেই প্রভাব খাটিয়ে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখান। অতীতে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজির জন্য গণধোলাইয়ের শিকারও হয়েছেন তিনি ও তার ছেলে।
সম্প্রতি মোহাম্মদপুরের ফিউচার হাউজিং এলাকার ব্যবসায়ী ও ওএমএস ডিলার মো. ইব্রাহিম (ইমন) থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। অভিযোগে তিনি জানান, গত ৭ আগস্ট দুপুরে শফিকুল বাশার ও তার ছেলে রাজিব তার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় এবং মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে জেল হাজতে পাঠানোর ভয় দেখানো হয়। ভুক্তভোগীর দাবি, চাঁদাবাজির ঘটনাটির ভিডিও ফুটেজ তার কাছে রয়েছে।
ইব্রাহিম আরও জানান, ৯ আগস্ট উল্টো তার নামেও থানায় একটি জিডি করেন তারা। এ ঘটনায় নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে তিনি প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, সাংবাদিক পরিচয়ে শফিকুল বাশার দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ভয়ভীতি ছড়িয়ে চাঁদাবাজি করছেন। কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ বা মামলার ভয় দেখান। এতে ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাংবাদিকতার নাম ব্যবহার করে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালানো এক ধরনের ‘হলুদ সাংবাদিকতা’। এটি শুধু সাধারণ মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না, বরং পুরো গণমাধ্যমের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট করে। তাই পত্রিকা হাউস ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর উচিত সাংবাদিক নিয়োগে কঠোর যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা।
স্থানীয়রা আশা করছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। তাদের মতে, এই ঘটনা শুধু একজন ব্যবসায়ীর চাঁদাবাজির অভিযোগ নয়, বরং সাংবাদিকতার নামে অপরাধ ঢাকার এক ভয়ংকর প্রবণতার উদাহরণ।