ঢাকা ১০:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বীরগঞ্জে নির্যাতনে অপমৃত্যুর প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন

প্রসেনজিৎ চন্দ্র শর্মা,দিনাজপুর::

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার টিবিএম কলেজের অধ্যক্ষ লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অফিস সহায়ক আবু বক্করকে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এই নির্যাতনের ফলে আবু বক্করের মৃত্যুর প্রতিবাদে এবং অধ্যক্ষের শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন করেছে।

গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত বীরগঞ্জ উপজেলার চৌধুরীহাটে মেইন রাস্তায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন চৌধুরীহাটের বাসিন্দারা। মানববন্ধনে আবু বক্করের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ অসংখ্য মানুষ অংশ নেন।

মানববন্ধনে আবু বক্করের স্ত্রী রুবিনা খাতুন অভিযোগ করেন, “অধ্যক্ষ লিয়াকত আলী আমার স্বামীকে বিভিন্ন সময় অপমান ও লাঞ্ছিত করতেন। কলেজের থাই গ্লাস ভাঙার ক্ষতিপূরণের চাপ দিয়ে তাকে মানসিক যন্ত্রণায় রাখেন। শারীরিক ও মানসিক এই নির্যাতনের কারণে আমার স্বামী স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেছে। আমি আমার দুই ছেলের ভবিষ্যৎ চিন্তায় এখন দিশেহারা। আমার স্বামীর বদলে আমি চাকরি চাই।”

তার বড় ছেলে রুবাইয়েত হোসেন বলেন, আমার বাবার মৃত্যুর জন্য অধ্যক্ষ লিয়াকত আলী দায়ী। আমরা সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে এখানে এসেছি।

১০নং মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহিনুর রহমান চৌধুরী বলেন, “অধ্যক্ষের এই আচরণ অমানবিক। কোনো ত্রুটি হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যেত। কিন্তু একটি অসুস্থ ব্যক্তিকে এমনভাবে নির্যাতন করা হয়েছে, যা তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে তদন্ত সাপেক্ষে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।

মানববন্ধনের একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা রাস্তা অবরোধ করলে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল গফুর ঘটনাস্থলে পৌঁছে মানববন্ধনকারীদের আশ্বস্ত করেন। তিনি জানান, উভয় পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

১২ জানুয়ারি (রবিবার) রাতে আবু বক্কর হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। তিনি উপজেলার কৃষ্ণনগর এলাকার বাসিন্দা এবং বীরগঞ্জ টিবিএম কলেজের অফিস সহায়ক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার মৃত্যুর ঘটনায় এলাকাবাসী ও পরিবারের সদস্যরা অধ্যক্ষ লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা ও মানববন্ধনকারীরা বলেন, অধ্যক্ষের এই অমানবিক আচরণের সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। দোষী প্রমাণিত হলে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত ও আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।

মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি শেষে আন্দোলনকারীরা অধ্যক্ষের শাস্তির দাবিতে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৪:০৫:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫
৫১৭ বার পড়া হয়েছে

বীরগঞ্জে নির্যাতনে অপমৃত্যুর প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন

আপডেট সময় ০৪:০৫:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার টিবিএম কলেজের অধ্যক্ষ লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অফিস সহায়ক আবু বক্করকে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এই নির্যাতনের ফলে আবু বক্করের মৃত্যুর প্রতিবাদে এবং অধ্যক্ষের শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন করেছে।

গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত বীরগঞ্জ উপজেলার চৌধুরীহাটে মেইন রাস্তায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন চৌধুরীহাটের বাসিন্দারা। মানববন্ধনে আবু বক্করের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ অসংখ্য মানুষ অংশ নেন।

মানববন্ধনে আবু বক্করের স্ত্রী রুবিনা খাতুন অভিযোগ করেন, “অধ্যক্ষ লিয়াকত আলী আমার স্বামীকে বিভিন্ন সময় অপমান ও লাঞ্ছিত করতেন। কলেজের থাই গ্লাস ভাঙার ক্ষতিপূরণের চাপ দিয়ে তাকে মানসিক যন্ত্রণায় রাখেন। শারীরিক ও মানসিক এই নির্যাতনের কারণে আমার স্বামী স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেছে। আমি আমার দুই ছেলের ভবিষ্যৎ চিন্তায় এখন দিশেহারা। আমার স্বামীর বদলে আমি চাকরি চাই।”

তার বড় ছেলে রুবাইয়েত হোসেন বলেন, আমার বাবার মৃত্যুর জন্য অধ্যক্ষ লিয়াকত আলী দায়ী। আমরা সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে এখানে এসেছি।

১০নং মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহিনুর রহমান চৌধুরী বলেন, “অধ্যক্ষের এই আচরণ অমানবিক। কোনো ত্রুটি হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যেত। কিন্তু একটি অসুস্থ ব্যক্তিকে এমনভাবে নির্যাতন করা হয়েছে, যা তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে তদন্ত সাপেক্ষে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।

মানববন্ধনের একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা রাস্তা অবরোধ করলে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল গফুর ঘটনাস্থলে পৌঁছে মানববন্ধনকারীদের আশ্বস্ত করেন। তিনি জানান, উভয় পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

১২ জানুয়ারি (রবিবার) রাতে আবু বক্কর হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। তিনি উপজেলার কৃষ্ণনগর এলাকার বাসিন্দা এবং বীরগঞ্জ টিবিএম কলেজের অফিস সহায়ক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার মৃত্যুর ঘটনায় এলাকাবাসী ও পরিবারের সদস্যরা অধ্যক্ষ লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা ও মানববন্ধনকারীরা বলেন, অধ্যক্ষের এই অমানবিক আচরণের সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। দোষী প্রমাণিত হলে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত ও আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।

মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি শেষে আন্দোলনকারীরা অধ্যক্ষের শাস্তির দাবিতে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/checkpostcom/public_html/wp-includes/functions.php on line 5464