বসন্তের আগমনে পলাশ
বসন্তের আগমন সাদরে বরণ করছে বাংলার প্রকৃতি, আর এরই মধ্যে পলাশ ফুলের অপরূপ রঙিন সৌন্দর্য মনের মাঝে আনন্দের ঝর্ণা বইয়ে দেয়। পলাশের নেশা তীব্র, তার ফুলের প্রেমের জালে জড়ায়নি এমন মানুষ খুব কমই আছে। বসন্তের অপরূপ রূপে ভাসছে বাংলার গাঁ-শহর, আর পলাশ ফুল সব জায়গাতেই আগুনের মতো জ্বলতে দেখা যায়।
ফাল্গুনের হাওয়ার সঙ্গে ঋতুরাজ বসন্তের প্রবাহ শুরু হলেও পলাশের বসন্ত মৌসুম মাত্র ২০-২৫ দিনের। এই সংক্ষিপ্ত সময়ে পলাশ ফুলের সৌন্দর্য এমন এক নেশায় ডুবিয়ে রাখে, যা ছড়িয়ে যায় সকল হৃদয়ে। তবে, এই নেশা মুহূর্তিক হলেও, স্মৃতির পাতায় গেথে যায় পুরো বছর। বসন্তের এক নতুন আগমনের অপেক্ষায় আমরা।
প্রকৃতির অপরূপ রূপের মতো পলাশ গাছ সবার নজর কাড়ে। এর গাঢ় সবুজ ত্রিপত্রী পাতা, ফাল্গুনে ফোটে টকটকে লাল, হলুদ, এবং লালচে কমলা রঙের ফুল। পলাশ গাছের শাখায় ঝরঝর বাতাসে ফুলের খেলা শুরু হয়, আর সেসব ফুল মানুষের হৃদয়ে এক গভীর আবেগের সুর সৃষ্টি করে।
বাঙালি সংস্কৃতির অঙ্গীকারে, পলাশের রঙের ছন্দায়িত ফুল আকাশে রক্তিম আলো ছড়িয়ে মনে নতুন সুর তুলে দেয়। বাংলার গ্রামে গ্রামে এই ফুলের সুমিষ্ট সৌন্দর্য নিয়ে সবার মনে এক অপরূপ অনুভূতির সৃষ্টি হয়। এ যেন এক অমৃত গন্ধের সুবাস, যা তৃতীয় চোখে পৃথিবীকে নতুনভাবে দেখার অনুভুতি দেয়।
আনন্দের প্রকাশ হতে কাজী নজরুল ইসলামও পলাশ ফুলের রূপ নিয়ে লিখেছিলেন,
“পলাশ ফুলের গেলাস ভরি’ পিয়াব অমিয়া তোমারে প্রিয়া,
চাঁদিনী রাতের চাঁদোয়া তলে বুকের আঁচল দিব পাতিয়া।”
এভাবেই বাংলার প্রতিটি অঞ্চলে পলাশের আগমন ও তার সৌন্দর্য বসন্তের রাজত্বকে সমৃদ্ধ করে থাকে।