ঢাকা দক্ষিণে যথাযোগ্য মর্যাদায় অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন
ঢাকা দক্ষিণের দোহার, নবাবগঞ্জ, কেরানীগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে। দিনটি উপলক্ষে স্থানীয় শহীদ মিনারে হাজারো মানুষ ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
একুশের প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় শ্রদ্ধা জানানোর আনুষ্ঠানিকতা। এরপর বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ খালি পায়ে, হাতে ফুল নিয়ে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। শহীদদের স্মরণে পরিবেশিত হয় কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি’।
ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস স্মরণ করে আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দেন রফিক, শফিক, সালাম, বরকত, জব্বারসহ আরও অনেকে। তাদের আত্মত্যাগের ফলেই বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পায়। ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘ একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, যা আজ বিশ্বজুড়ে বহুভাষিক চেতনার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিন স্থানীয় মসজিদ, মন্দির ও গির্জায় ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতির জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি, ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করে।
ঢাকা দক্ষিণের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। তারা বলেন, ভাষা আন্দোলনের চেতনা ধরে রাখার পাশাপাশি মাতৃভাষার সঠিক ব্যবহার ও চর্চা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
এদিকে, দিনটি উপলক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আলোচনা সভা, রচনা প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিশু-কিশোররা চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ভাষা শহীদদের স্মরণ করে।
অমর একুশের চেতনায় দেশ এগিয়ে যাবে, নতুন প্রজন্ম মাতৃভাষার মর্যাদা অটুট রাখবে—এমন প্রত্যাশা ছিল ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষের কণ্ঠে।