ডা. মুরাদ হাসানের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার দিকে উপজেলার আওনা ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা এ ঘটনা ঘটায়। একই সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছানোয়ার হোসেন বাদশার বাড়িতেও হামলা চালানো হয়।
সরকারের পতনের পর থেকেই সপরিবারে পলাতক রয়েছেন মুরাদ হাসান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক লাইভ বক্তব্যকে কেন্দ্র করে জামালপুরসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় মুরাদ হাসানের ব্যক্তিগত গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়।
২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ডা. মুরাদ হাসান। ২০১৮ সালে পুনরায় নির্বাচিত হয়ে তিনি প্রথমে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী এবং পরে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ অপসারণ, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের মেয়ে জায়মা রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যসহ নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন।
চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে মুরাদ হাসানের একটি অশ্লীল ফোনালাপ ভাইরাল হওয়ার পর সরকার তাকে মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণ করে। এরপর কানাডায় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তিনি। সর্বশেষ ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং পরাজিত হন।
অভিযোগ রয়েছে, সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে সরকারি প্রকল্পের বরাদ্দ লুটপাট, নিয়োগ বাণিজ্য, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার মালিক হন মুরাদ হাসান। তার বিরুদ্ধে এলাকায় একটি ‘মুকুল বাহিনী’ গড়ে তোলার অভিযোগও রয়েছে। এসব কারণে স্থানীয়দের মধ্যেও তার বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছিল।
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. চাঁদ মিয়া জানান, মুরাদ হাসানের বাড়ি ভাঙচুর সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ এখনো থানায় দায়ের করা হয়নি। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।