ঢাকা ০৪:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জামালপুরে আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

জাকিরুল ইসলাম,জামালপুর::

ছবি: প্রতিকী

জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মশিউর রহমান বাবু এবং তাঁর ছেলে রুবাঈদ রহমান মুগ্ধের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন এক ভুক্তভোগী নারী।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার পয়সা পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত রুবেল মিয়ার মেয়ে সুমি আক্তার বাদী হয়ে জামালপুর সদর থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেছেন, ২০২১ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে রুবাঈদ রহমান মুগ্ধের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। সেই সম্পর্কের জেরে মুগ্ধ সুমিকে জামালপুর বাণিজ্য মেলায় ঘুরতে আসার প্রস্তাব দেন। সরল বিশ্বাসে সুমি ঢাকার বাসা থেকে জামালপুরে আসেন। কিন্তু সেখানে আসার পর মুগ্ধ তাঁকে শহরের জিগাতলা এলাকার একটি বাসায় নিয়ে গিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেন এবং মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পরবর্তীতে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে একাধিকবার তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। একপর্যায়ে ২০২২ সালের ২৩ মার্চ মুগ্ধ এফিডেভিটের মাধ্যমে সুমিকে বিয়ে করেন, যা পরে ভূয়া বলে প্রমাণিত হয়।

মে ২০২২-এ সুমি জানতে পারেন তিনি অন্তঃসত্ত্বা। বিষয়টি জানালে মুগ্ধ যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এরপর তিনি জামালপুরে এসে মুগ্ধের বাবা মশিউর রহমান বাবুর কাছে বিষয়টি জানান। প্রথমে বাবু ৪ লক্ষ টাকা দিয়ে বিষয়টি মীমাংসার প্রস্তাব দেন। তাতে রাজি না হলে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরীর বাসায় নিয়ে গিয়ে ৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে গর্ভপাত করানোর প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হলে সুমিকে মারধর করা হয়, যার ফলে তার অনাগত সন্তান নষ্ট হয়ে যায়।

ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেছেন, জামালপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে ওসি তাঁর মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে তিনি জামালপুর জজ কোর্টে মামলা করতে গেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট বাকী বিল্লাহ বাধা দেন।

তবে গত রবিবার (২ জানুয়ারি) রাতে জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সাল জানান, মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৩-৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী, মশিউর রহমান বাবু ও রুবাঈদ রহমান মুগ্ধের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁদের পাওয়া যায়নি।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০২:১৪:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
৫০৭ বার পড়া হয়েছে

জামালপুরে আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

আপডেট সময় ০২:১৪:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মশিউর রহমান বাবু এবং তাঁর ছেলে রুবাঈদ রহমান মুগ্ধের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন এক ভুক্তভোগী নারী।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার পয়সা পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত রুবেল মিয়ার মেয়ে সুমি আক্তার বাদী হয়ে জামালপুর সদর থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেছেন, ২০২১ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে রুবাঈদ রহমান মুগ্ধের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। সেই সম্পর্কের জেরে মুগ্ধ সুমিকে জামালপুর বাণিজ্য মেলায় ঘুরতে আসার প্রস্তাব দেন। সরল বিশ্বাসে সুমি ঢাকার বাসা থেকে জামালপুরে আসেন। কিন্তু সেখানে আসার পর মুগ্ধ তাঁকে শহরের জিগাতলা এলাকার একটি বাসায় নিয়ে গিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেন এবং মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পরবর্তীতে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে একাধিকবার তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। একপর্যায়ে ২০২২ সালের ২৩ মার্চ মুগ্ধ এফিডেভিটের মাধ্যমে সুমিকে বিয়ে করেন, যা পরে ভূয়া বলে প্রমাণিত হয়।

মে ২০২২-এ সুমি জানতে পারেন তিনি অন্তঃসত্ত্বা। বিষয়টি জানালে মুগ্ধ যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এরপর তিনি জামালপুরে এসে মুগ্ধের বাবা মশিউর রহমান বাবুর কাছে বিষয়টি জানান। প্রথমে বাবু ৪ লক্ষ টাকা দিয়ে বিষয়টি মীমাংসার প্রস্তাব দেন। তাতে রাজি না হলে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরীর বাসায় নিয়ে গিয়ে ৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে গর্ভপাত করানোর প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হলে সুমিকে মারধর করা হয়, যার ফলে তার অনাগত সন্তান নষ্ট হয়ে যায়।

ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেছেন, জামালপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে ওসি তাঁর মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে তিনি জামালপুর জজ কোর্টে মামলা করতে গেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট বাকী বিল্লাহ বাধা দেন।

তবে গত রবিবার (২ জানুয়ারি) রাতে জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সাল জানান, মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৩-৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী, মশিউর রহমান বাবু ও রুবাঈদ রহমান মুগ্ধের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁদের পাওয়া যায়নি।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/checkpostcom/public_html/wp-includes/functions.php on line 5464