একটি অনুপ্রেরণার ইতিহাস
চার মিনিটের মাইল: অসম্ভবকে সম্ভব করার গল্প
এক সময়ের প্রচলিত বিশ্বাস ছিল, মানবদেহের পক্ষে এক মাইল রাস্তা চার মিনিটের কম সময়ে দৌড়ে শেষ করা অসম্ভব। এটি শুধু একটি শারীরিক সীমা নয়, বরং এক মনস্তাত্ত্বিক দেয়াল হিসেবে দেখা হতো।
এই ধারণাকেই ভুল প্রমাণ করেন স্যার রজার গিলবার্ট ব্যানিস্টার। ১৯৫৪ সালের ৬ মে, অক্সফোর্ডের ইফলি রোড ট্র্যাকে তিনি মাত্র ৩ মিনিট ৫৯.৪ সেকেন্ডে এক মাইল দৌড় শেষ করে মানব ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন।
তাঁর এই অর্জন কেবল একটি ক্রীড়া রেকর্ড নয়, এটি ছিল মানুষের সম্ভাবনার সীমা ভাঙার প্রতীক। “চার মিনিটের মাইল” ছিল দীর্ঘদিন ধরে মানুষের কাছে এক প্রকার ‘অসম্ভব’ সীমানা। কিন্তু ব্যানিস্টার প্রমাণ করেন – যথেষ্ট ইচ্ছাশক্তি, অনুশীলন ও আত্মবিশ্বাস থাকলে অসম্ভব বলে কিছু নেই।
রেকর্ডের বাইরে এক অনন্য জীবন
ব্যানিস্টার কেবল দৌড়বিদ ছিলেন না। দৌড়ের বাইরে তার আরেকটি পরিচয়—নিউরোলজিস্ট। তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পেমব্রোক কলেজের মাস্টার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর ক্রীড়া ও চিকিৎসা বিজ্ঞানে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৭৫ সালে তাকে নাইটহুড প্রদান করা হয়।
তিনি জন্মগ্রহণ করেন ২৩ মার্চ ১৯২৯, হারো, ইংল্যান্ডে এবং ৩ মার্চ ২০১৮ সালে অক্সফোর্ডে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর আগে তিনি পারকিনসন রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
বর্তমানের প্রেক্ষাপট
বর্তমানে পেশাদার দৌড়বিদরা চার মিনিটে কেবল এক মাইল নয়, এক কিলোমিটারের অনেক কম সময়েই পৌঁছে যান।
উদাহরণস্বরূপ:
১০০০ মিটার (১ কিলোমিটার) বিশ্বরেকর্ড
-
নোয়াহ নেগেনি (কেনিয়া)
-
সময়: ২ মিনিট ১১.৯৫ সেকেন্ড
-
বছর: ১৯৯৯
১৫০০ মিটার বিশ্বরেকর্ড
পুরুষদের মধ্যে:
-
হিচাম এল গেরুজ (মরক্কো)
-
সময়: ৩ মিনিট ২৬ সেকেন্ড (১৯৯৮)
নারীদের মধ্যে:
-
ফেইথ কিপিয়েগন (কেনিয়া)
-
সময়: ৩ মিনিট ৪৮.৬৮ সেকেন্ড
-
তারিখ: ৫ জুলাই ২০২৫, ইউজিন, যুক্তরাষ্ট্র
ফেইথ কিপিয়েগন নিজের আগের রেকর্ড ভেঙেই এই নতুন রেকর্ড গড়েছেন।