গোমস্তাপুরে মেডিক্যাল কলেজে চান্স পাওয়া দুজন শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ালেন ইউএনও
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলায় আলীনগর ও রহনপুর ইউনিয়নের দুই দরিদ্র শিক্ষার্থী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির জন্য মনোনীত হওয়ায় তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত আনজুম অনন্যা। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে সুমাইয়া ও হাবিবা নামের ওই শিক্ষার্থীরা গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে তার সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করেন।
উপস্থিত ছিলেন শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা, গোমস্তাপুর স্মার্ট প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সামিরুল ইসলাম, সাংবাদিক নাহিদ, নুর মোহাম্মদ, সুমাইয়ার পিতা মো. সাজেমান আলী সহ স্থানীয় অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ।
সুমাইয়া রহনপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে রহনপুর জ্ঞানচক্র একাডেমি থেকে এসএসসি এবং ইউসুফ আলী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। সে বাসায় বসেই মেডিক্যাল কলেজের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে এবং কোচিং ছাড়াই নওগাঁ মেডিক্যাল কলেজে ৭৫.৭৫ নম্বর পেয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। মেধা তালিকায় তার অবস্থান ৩৭৭০। সুমাইয়া জানান, তার কৃষক পিতা মো. সাজেমান আলী এবং মাতা মোসাম্মৎ হাবিবা বেগমের অনুপ্রেরণায় তিনি এতদূর আসতে পেরেছেন।
অপরদিকে, হাবিবা তার লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত পিতা মো. মোজাহার বিশ্বাসের বড় সংসারে থেকেও ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে চান্স পেয়েছেন। হাবিবা জানান, গতবার চান্স না পাওয়ার পর অনেকেই তাকে কটু কথা বলেছিল, কিন্তু সে হতাশ না হয়ে আরও দ্বিগুণ পরিশ্রম করে এই ফলাফল অর্জন করেছে। তার প্রাপ্ত নম্বর ৮০.২৫ এবং মেধাক্রম ২৫৩৭।
গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত আনজুম অনন্যা বলেন, “সুমাইয়া এবং হাবিবার ফলাফলে গোমস্তাপুর উপজেলাবাসী গর্বিত। দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসে তাদের এই অর্জন চমকপ্রদ। গোমস্তাপুর উপজেলা প্রশাসন তাদের মেডিক্যাল কলেজের ভর্তি ফি ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচের দায়িত্ব নেবে। এছাড়া, তাদের পাশে সবসময় থাকার বিষয়ে আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”
এ ধরনের সহায়তা ও উদ্যোগ স্থানীয় শিক্ষা ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে এক নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে, যা অন্যদেরও প্রেরণা যোগাবে।