গতকাল (১২ জানুয়ারি) বিকাল ৪টায় খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে রাজ্যায়ত্ত পাটকল রক্ষা খুলনা, যশোর আঞ্চলিক কমিটির উদ্যোগে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের নিকট একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়, যেখানে পাটকলগুলোর বর্তমান অবস্থা এবং শ্রমিকদের সংকটময় পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ২০২০ সালে সরকারী প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পাটকলগুলোর উৎপাদন বন্ধ করার পর থেকে, বন্ধকৃত পাটকলগুলোর অভ্যন্তরে অবৈধ মালামাল পাচার, যন্ত্রাংশ চুরি এবং টেন্ডারের মাধ্যমে লুটপাটের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। শ্রমিক নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, মিল কর্তৃপক্ষ এবং কিছু অসাধু কর্মকর্তা চোর সিন্ডিকেটের সাথে জড়িয়ে এই পাচার ও লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে। তবে, স্থানীয় জনগণের বাধার মুখে কিছুটা হলেও চুরি বন্ধ হয়েছে।
শ্রমিক নেতৃবৃন্দ দাবি করেছেন, সরকারি পাটকলগুলোর পুনরায় রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় চালু করতে হবে এবং লিজ প্রথা বাতিল করে শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করতে হবে। তারা দাবি করেছেন, পাটমন্ত্রী, সাবেক পাটমন্ত্রী, শ্রমপ্রতিমন্ত্রী এবং বর্তমান পাট সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
এছাড়া, বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা দাবি করেছেন যে, মিলের শ্রমিকদের সকল পাওনা পরিশোধ করতে হবে, মিল অভ্যন্তরীণ শ্রমিকদের বসবাসের ব্যবস্থা করতে হবে এবং সঠিক তদন্তের মাধ্যমে মিথ্যা মামলাগুলোর অবসান ঘটাতে হবে। তারা আরো অভিযোগ করেছেন, বন্ধকৃত পাটকলগুলোর ২৫টি মিলের প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক কর্মসংস্থান হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন, অনেকেই বিকল্প কাজ বা ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়েছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন পাটকল রক্ষা খুলনা, যশোর আঞ্চলিক কমিটির আহ্বায়ক ও জাতীয়তাবাদী পাট শ্রমিক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শমসের আলম, সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক, মোঃ গিয়াস উদ্দিন, মোঃ শামিম আহমেদ, ওলিয়ার রহমান, শরিফুল ইসলাম, আলমগীর হোসেন, খুলনা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মুখ সারির সমন্বয়কারী মোঃ আলামিন শেখ, শরব মহাসান মাহিন, মোঃ মেহেদি হাসান, মোঃ শামস, মোঃ লিটন, মোঃ আনিস, মোঃ আলামিন হোসেন, মোঃ সাগর সহ অন্যান্য শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।