খুলনার প্রতিষ্ঠা দিবসে আনন্দমুখর আয়োজন
খুলনা জেলার ১৪৩ তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে আজ শুক্রবার বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে “খুলনা দিবস” পালিত হয়েছে। বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে খুলনাবাসী একত্রিত হয়ে শহরের শিববাড়ি মোড়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অংশ নেন।
সকালে, সকাল ১০ টায় শুরু হওয়া সমাবেশে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে দিনব্যাপি কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। খুলনা বিভাগের কমিশনার ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. ফিটোজ সরকার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর একটি বিশাল শোভাযাত্রা বের হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শিববাড়ি মোড়ে ফিরে আসে। শোভাযাত্রায় ছিল পালকি, ঘোড়ার গাড়ি, সাইকেলিং, আদিম মানুষ, জেলে, রোভার স্কাউট, গার্লস গাইড, ব্যান্ড পার্টিসহ নানা সাংস্কৃতিক দলের অংশগ্রহণ।
খুলনা দিবস উপলক্ষ্যে উন্নয়ন কমিটির পক্ষ থেকে একটি স্মরনীয় স্মারক প্রকাশ করা হয় এবং খুলনা মেজবানীসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও অন্যান্য নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। ১৮৮২ সালের ২৫ এপ্রিল গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে খুলনাকে জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল, এবং সেই থেকে প্রতিবছর এই দিনটি নানা আয়োজনের মাধ্যমে পালিত হয়ে আসছে।
উদ্বোধনী সমাবেশে বক্তারা খুলনার সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তাঁরা খুলনার ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “খুলনার উন্নয়নের জন্য যেসব দাবী এখনও পূর্ণ হয়নি, তা অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে।”
দিনব্যাপি এই কর্মসূচিতে খুলনার প্রশাসনিক কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী সংগঠনসহ বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন।
উদ্বোধনী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উন্নয়ন কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান। সমাবেশের সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের মহাসচিব এ্যাড. শেখ হাফিজুর রহমান। বক্তৃতা প্রদানকারী অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন, খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল হক, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার, খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, খুলনা মহানগর বিএনপি সভাপতি এ্যাড. এস এম শফিকুল আলম মনা, জামায়াতে ইসলামী খুলনা মহানগরীর আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, সিপিবি নেতা এস এ রশীদ, এবং আরও অনেক রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।
সন্ধ্যায়, শিববাড়ি মোড়ে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও অনুষ্ঠিত হয়, যা দিনব্যাপি এ উদযাপনকে চূড়ান্তভাবে রাঙিয়ে তোলে।
এবারের “খুলনা দিবস” ছিল একটি ঐতিহাসিক দিন, যা খুলনার উন্নয়ন এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে স্মরণ ও উদযাপন করার একটি মহান উদ্যোগ হিসেবে ইতিহাসে স্থান পেল।