ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পুতিনকে ফোন ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এর মাধ্যমে দেশটির প্রায় আড়াইশো বছরের ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে এক মেয়াদের বিরতিতে দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউসে ফিরতে চলেছেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
আগামী বছরের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন ট্রাম্প। তবে এর আগেই যেন ‘কাজ শুরু করে দিয়েছেন তিনি’। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ইতোমধ্যেই তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।
ইউক্রেনে উত্তেজনা আর না বাড়াতে ফোনালাপে পুতিনকে পরামর্শ দিয়েছেন ট্রাম্প। যদিও ফোনালাপের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলপ্রকাশ সম্পূর্ণ হয়নি।
সোমবার (১১ নভেম্বর) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে ফোনে কথা বলেছেন এবং তাকে ইউক্রেন যুদ্ধ আর না বাড়াতে পরামর্শ দিয়েছেন বলে তাদের কথোপকথনের বিষয়ে অবগত একটি সূত্র রোববার রয়টার্সকে জানিয়েছে।
সূত্রটি জানিয়েছে, সাম্প্রতিক দিনগুলোর ভেতরেই ট্রাম্প ও পুতিন কথা বলেছেন। এর আগে গত বুধবার ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেন। নির্বাচনের আগে ট্রাম্প অবশ্য ইউক্রেনের জন্য মার্কিন সামরিক ও আর্থিক সহায়তার সমালোচনা করেছেন এবং আড়াই বছর ধরে চলা এই যুদ্ধ দ্রুত শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যদিও কীভাবে তিনি সেটি করবেন তা বলেননি।
সংবাদমাধ্যম বলছে, নির্বাচনে জয়ের পরেই রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করেন প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার ফ্লোরিডায় নিজের বাসভবন থেকেই পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ করেন ট্রাম্প। তখনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলপ্রকাশ সম্পূর্ণ হয়নি। তার আগেই দুই নেতার মধ্যে কথা হয়। সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হচ্ছে, তাদের কথোপকথনের মূল বিষয় ছিল ইউক্রেন যুদ্ধ।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ট্রাম্প এবং পুতিনের মধ্যে ফোনকলের বিষয়ে তাদেরকে আগে জানানো হয়নি এবং এই কারণে তারা এই বিষয়ে সমর্থন বা আপত্তি জানাতে পারে না।
পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের বিষয়ে ওয়াশিংটন পোস্টে প্রথম সংবাদ প্রকাশিত হয় এবং পরে ট্রাম্পের যোগাযোগ পরিচালক স্টিভেন চেউংকে এই ফোনকল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং অন্যান্য বিশ্ব নেতাদের মধ্যে ব্যক্তিগত ফোনকলের বিষয়ে মন্তব্য করি না।”
অবশ্য এই ফোনকলের বিষয়ে ওয়াশিংটনে অবস্থিত রাশিয়ান দূতাবাস কোনও মন্তব্য করেনি। ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, পুতিনকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ থামানোর আবেদন জানিয়েছেন ট্রাম্প।
মূলত ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এ সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন ট্রাম্প। যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য এবং সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য তিনি আলোচনায় বসার আগ্রহও প্রকাশ করেছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করে দ্রুত এই সংকট সমাধানে আগ্রহী ট্রাম্প, নির্বাচনের আগেই তা জানা গিয়েছিল। অনেকেই মনে করছেন, জো বাইডেন প্রশাসনের মতো ট্রাম্প কোটি কোটি ডলার দিয়ে ইউক্রেনকে যুদ্ধে সহায়তা করবেন না। বরং তিনি যুদ্ধ থামাতে বেশি আগ্রহী।
তিনি ক্ষমতায় আসার পর গত আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধ বন্ধ হতে পারে বলেও অনেকে আশা প্রকাশ করছেন।