অস্ত্র ফেরতের আবদার সাবেক কাউন্সিলরদের, গোয়েন্দাদের আপত্তি
খুলনা সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে একসময় প্রভাবশালী ছিলেন কয়েকজন সাবেক কাউন্সিলর। রাজনৈতিক আশীর্বাদে তারা বৈধ অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে মহড়া দিতেন, যার কারণে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে থাকত। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের পর তাদের অনেকেই পলাতক, কেউ কারাগারে, আবার কেউ জামিনে মুক্ত হয়ে গৃহবন্দি জীবনযাপন করছেন।
সম্প্রতি এদের কয়েকজন পুরনো অভ্যাসে আবারও বৈধ অস্ত্র ফেরত চেয়ে আবেদন করেছেন। তবে গোয়েন্দা সংস্থার মতামতে বলা হয়েছে, তাদের হাতে অস্ত্র ফিরলে এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ফলে তাদের আবেদন আপাতত স্থগিত রয়েছে।
খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদ পিন্টু (৭ নং ওয়ার্ড), আনিসুর রহমান বিশ্বাস (১৬ নং), এস এম রফিউদ্দিন (২৭ নং), আরিফ হোসেন মিঠু (৩১ নং) অস্ত্র ফেরতের আবেদন করেছেন। এছাড়া সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত সাবেক কাউন্সিলর গোলাম রব্বানী টিপুও খুন হওয়ার আগে আবেদন করেছিলেন।
তাদের সঙ্গে আরও আবেদন করেছেন বাহাউদ্দিন খন্দকার, ওমর ফারুক বিশ্বাস, ঠিকাদার শেখ মাহাবুবুর রহমান, মুজিবুর রহমান শামীম ও আওয়ামী লীগ নেতা আলমগীর কবীর।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ২৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দেওয়া সব অস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়। তিন দিনের মধ্যে বৈধ অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। খুলনা থেকে ওই সময়ে ৫২৪ জন লাইসেন্সধারীর মধ্যে ৫২২ জন অস্ত্র জমা দেন। নির্দেশ অমান্য করায় সাবেক এমপি শেখ হেলাল উদ্দিন ও কাজী মোমিনুল হকের লাইসেন্স বাতিল করা হয়।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত প্রায় ৩২০ জন আবেদনকারী অস্ত্র ফেরত পেয়েছেন। এর মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ রয়েছেন। তবে বিতর্কিত সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতারা এখনো অস্ত্র ফেরত পাননি।
সুলতান মাহমুদ পিন্টু একাধিক মামলার আসামি হয়ে বর্তমানে জেলে। আনিসুর রহমান বিশ্বাস বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে দাপটের সঙ্গে ব্যবসা করেছেন। বর্তমানে জামিনে মুক্ত। আরিফ হোসেন মিঠু রাজনৈতিক কোন্দলে বহুবার জেলে গেছেন। বর্তমানে আত্মগোপনে।
এলাকাবাসীর আশঙ্কা, বিতর্কিত এসব নেতাদের হাতে অস্ত্র ফেরত এলে আবারও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে যেতে পারে।