শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে নগরীর বানরগাতি এলাকায় অর্ণবের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, পরিবারের সবাই শোকে নির্বাক। অর্ণবের বাবা নিতীশ কুমার সরকার রাস্তার মোড়ে বসে আছেন, তাকে ঘিরে মানুষের ভিড়। তিনি বিলাপ করতে করতে বলছেন, “আমার ছেলে কারও কোনো ক্ষতি করেনি। কেন ওরা আমার ছেলেকে এভাবে হত্যা করলো? আমি বিচার চাই। কে করবে বিচার ?
অর্ণবের ছোট ভাই অনীক কুমার সরকার জানান, তিনি ঢাকার একটি ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুত ছিলেন, কিন্তু ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ শুনে ভেঙে পড়েছেন। তিনি বলেন, “অর্ণব কারও সঙ্গে শত্রুতা করেনি। কেন তাকে এভাবে হত্যা করা হলো, বুঝতে পারছি না। অর্ণব খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের এমবিএর ছাত্র ছিলেন এবং পড়াশোনার পাশাপাশি বাবার কনস্ট্রাকশন ব্যবসা দেখাশোনা করতেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাত সোয়া ৯টার দিকে খুলনা নগরীর শেখ পাড়া তেঁতুলতলা মোড়ে অর্ণব একটি চায়ের দোকানে বসে ছিলেন। এ সময় ১০-১৫টি মোটরসাইকেলে করে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা এসে তাকে প্রথমে গুলি করে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রেখে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অর্ণব একজন ভদ্র ও শান্ত স্বভাবের মানুষ ছিলেন। তার কোনো শত্রু ছিল না। একজন প্রতিবেশী জানান, “অর্ণবের মতো ছেলেকে যারা এভাবে হত্যা করলো, তারা কতটা নিষ্ঠুর হতে পারে, তা ভাবাই যায় না।”
সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, অর্ণব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শনিবার দুপুর দেড়টা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। তবে হত্যার পেছনে কোনো পুরনো শত্রুতার সম্পর্ক থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার দুপুর পৌনে ১টায় অর্ণবের মরদেহ তার বাড়িতে নেওয়া হয়। এরপর গল্লামারী শ্মশানঘাটে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
অর্ণব হত্যার ঘটনায় পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পরিবারের সদস্যরা হত্যাকারীদের দ্রুত শাস্তি দাবি করেছেন।