ঢাকা ১০:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হবিগঞ্জে শিল্পদূষণ পরিদর্শন ও পথসভা

এম এ ওয়াহেদ, লাখাই::

হবিগঞ্জে শিল্পদূষণ পরিদর্শন ও পথসভা

হবিগঞ্জে শিল্পবর্জ্য দূষণে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন ও পথসভা করেছে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার।

শুক্রবার (০৩ জানুয়ারি) ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)-র সদস্য সচিব শরীফ জামিলের নেতৃত্বে মাধবপুর উপজেলার সাতপাড়িয়া এলাকা পরিদর্শন ও পথসভা করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাডভোকেট মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল, বিশিষ্ট লেখক তাহমিনা বেগম গিনি, খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল, পরিবেশকর্মী আব্দুল কাইয়ূম, মোহাম্মদ বাহার উদ্দিন, চাঁদ সুলতানা চৌধুরী, আনু বেগম প্রমুখ।

পরিদর্শনকালে প্রতিনিধিদল রাজখালসহ সংশ্লিষ্ট গ্রামসমূহে দূষণের ভয়াবহ চিত্র দেখতে পান। স্থানীয় মানুষের বর্ণনায় দূষিত পানির সংস্পর্শে এসে গবাদি পশুর মৃত্যু এবং ফসলের মাঠে ফসল না হওয়ার কষ্ট এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা করে। পরিদর্শনে জানা যায়, এই খালের দূষণ প্রাথমিকভাবে সরাসরি চারটি গ্রামে ব্যাপক মানবিক বিপর্যয় ডেকে এনেছে এবং এই দূষণ বলভদ্র নদী হয়ে মেঘনা নদী পর্যন্ত বিস্তৃত।

ধরা-র সদস্য সচিব ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, “কোন শিল্পকারখানা উৎসে বর্জ্য পরিশোধন না করে প্রাকৃতিক খাল, জলাধারে বা উন্মুক্ত স্থানে নিক্ষেপ করতে পারে না। হবিগঞ্জের শিল্পদূষণ নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে একটি শক্তিশালী সরকারি টিম স্থায়ীভাবে নিয়োগের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। আমরা আশা করি, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অবিলম্বে হবিগঞ্জে চলমান ব্যাপক শিল্পদূষণ বন্ধে জনসম্পৃক্ত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। যেহেতু মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে, আমি তাদেরকে সংঘটিত হয়ে এই শিল্প দূষণের প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানাই।”

শিল্পদূষণে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার লোকজনের মধ্যে কথা বলেন আব্দুর নুর, আব্দুর রউফ, মো. আজদু শাহ, সাবেক শিক্ষক আবু ইউসুফ, গৃহবধূ শামসুন্নাহার, ইসহাক মিয়া, মো. হুমায়ুন কবির, মোতাহের হোসেন, মো. অলি মিয়া ও মস্তু মিয়া। তারা দূষণের ফলে তাদের জীবনের দুর্বিষহ পরিস্থিতি বর্ণনা করেন। তাদের মতে, শিল্পকারখানার দূষণ প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে স্থানীয় পরিবেশ ও জনগণের জীবনযাত্রা আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।

ধরা ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপারের এই উদ্যোগ দূষণের বিরুদ্ধে একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। তবে এটি শুধুমাত্র সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ না রেখে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে।

 

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৬:০৩:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৫
৬৩৫ বার পড়া হয়েছে

হবিগঞ্জে শিল্পদূষণ পরিদর্শন ও পথসভা

আপডেট সময় ০৬:০৩:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৫

হবিগঞ্জে শিল্পবর্জ্য দূষণে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন ও পথসভা করেছে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার।

শুক্রবার (০৩ জানুয়ারি) ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)-র সদস্য সচিব শরীফ জামিলের নেতৃত্বে মাধবপুর উপজেলার সাতপাড়িয়া এলাকা পরিদর্শন ও পথসভা করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাডভোকেট মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল, বিশিষ্ট লেখক তাহমিনা বেগম গিনি, খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল, পরিবেশকর্মী আব্দুল কাইয়ূম, মোহাম্মদ বাহার উদ্দিন, চাঁদ সুলতানা চৌধুরী, আনু বেগম প্রমুখ।

পরিদর্শনকালে প্রতিনিধিদল রাজখালসহ সংশ্লিষ্ট গ্রামসমূহে দূষণের ভয়াবহ চিত্র দেখতে পান। স্থানীয় মানুষের বর্ণনায় দূষিত পানির সংস্পর্শে এসে গবাদি পশুর মৃত্যু এবং ফসলের মাঠে ফসল না হওয়ার কষ্ট এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা করে। পরিদর্শনে জানা যায়, এই খালের দূষণ প্রাথমিকভাবে সরাসরি চারটি গ্রামে ব্যাপক মানবিক বিপর্যয় ডেকে এনেছে এবং এই দূষণ বলভদ্র নদী হয়ে মেঘনা নদী পর্যন্ত বিস্তৃত।

ধরা-র সদস্য সচিব ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, “কোন শিল্পকারখানা উৎসে বর্জ্য পরিশোধন না করে প্রাকৃতিক খাল, জলাধারে বা উন্মুক্ত স্থানে নিক্ষেপ করতে পারে না। হবিগঞ্জের শিল্পদূষণ নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে একটি শক্তিশালী সরকারি টিম স্থায়ীভাবে নিয়োগের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। আমরা আশা করি, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অবিলম্বে হবিগঞ্জে চলমান ব্যাপক শিল্পদূষণ বন্ধে জনসম্পৃক্ত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। যেহেতু মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে, আমি তাদেরকে সংঘটিত হয়ে এই শিল্প দূষণের প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানাই।”

শিল্পদূষণে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার লোকজনের মধ্যে কথা বলেন আব্দুর নুর, আব্দুর রউফ, মো. আজদু শাহ, সাবেক শিক্ষক আবু ইউসুফ, গৃহবধূ শামসুন্নাহার, ইসহাক মিয়া, মো. হুমায়ুন কবির, মোতাহের হোসেন, মো. অলি মিয়া ও মস্তু মিয়া। তারা দূষণের ফলে তাদের জীবনের দুর্বিষহ পরিস্থিতি বর্ণনা করেন। তাদের মতে, শিল্পকারখানার দূষণ প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে স্থানীয় পরিবেশ ও জনগণের জীবনযাত্রা আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।

ধরা ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপারের এই উদ্যোগ দূষণের বিরুদ্ধে একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। তবে এটি শুধুমাত্র সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ না রেখে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে।