পানামা পোর্টে বছরে ৭০ কোটি টাকা চাঁদাবাজি, কী বলছেন ব্যবসায়ীরা?
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ পানামা পোর্টের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সোনামসজিদ স্থলবন্দর জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন তারা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বন্দরের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে হুমকীর মুখে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হলেও তাদের সেবা দেয়া হয় না। এ ছাড়া অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের প্রতিবাদ করায় আমদানিকারকদের প্রশাসনের মাধ্যমে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়। পরে সোনামসজিদ আমদানি ও রফতানিকারক গ্রুপ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।
আমদানি ও রফতানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ অভিযোগ করেন, ২০১৯ সাল থেকে হঠাৎ ৭৮৩ টাকার পরিবর্তে ৮ হাজার টাকা মাশুল আদায় শুরু করে সোনামসজিদ পানামা পোর্ট লিংক লিমিডেট। এ ছাড়া এসব অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা না করে পানামা পোর্টের ব্যক্তিগত একাউন্টে জমার অভিযোগ করেন তারা। ফলে গত দেড় যুগে কয়েকশ কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ করেন ব্যবসায়ী নেতারা।
তিনি আরও বলেন, ‘রাজস্ব আদায়ের দিক থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরটি দ্বিতীয় হলেও ২০০৬ সালে বন্দরটি উদ্বোধনের পর থেকে এখন পর্যন্ত বিওটির শর্ত মোতাবেক বন্দরের অভ্যন্তরে অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ শেষ করতে পারেনি পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেড। এ ছাড়া ফোর্ক লিফট, ক্রেন, রেকার, হেভিওয়েট স্কেলের মতো পূর্ণ সক্ষমতার লজিস্টিক সাপোর্টের ব্যবস্থা করতে পারেনি পানামা।
আমদানি ও রফতানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেড কোম্পানির স্বেচ্ছাচারিতা ও অব্যবস্থাপনায় আমদানি-রফতানিকারকরা একদিকে যেমন পণ্য খালাসে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, অন্যদিকে সরকারি রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছেন। আর তাই পানামা পোর্ট অপারেটরের যাবতীয় বিল ব্যাংক বুথে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে সরকার নির্ধারিত একাউন্টে জমা, পানামার আভ্যন্তরীণ পরিধি বৃদ্ধি, লোড-আনলোডে নতুন অবকাঠামো নির্মাণ এবং পানামার অভ্যন্তরে পণ্যবাহী ট্রাক থেকে বিভিন্ন কৌশলে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।
এ সময় তারা আরও অভিযোগ করেন, লুটপাটের এসব টাকা স্থানীয় সাবেক এমপি সামিল উদ্দীন আহমেদ শিমুল, তার ভাই সোহেল উদ্দীন আহমেদ পলাশসহ পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ভাগবাটোয়ারা করছেন দীর্ঘদিন ধরে।
বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনে আল মদিনা ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মো. দেলোয়ার হোসেন, জোহরা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী নূর আমিন, আরিশা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আলমগীর জুয়েল, জেএন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী নাসিমসহ সোনামসজিদ আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।