ঢাকা ০৭:৪৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটা আন্দোলন

‘বাবাকে দেখি না, ফোনও করে না’

চেকপোস্ট ডেস্ক::

‘বাবা কি আর আমাদের কাছে আসবে না। এগারো দিন হলো বাবাকে দেখি না, মোবাইলে ফোনও করে না। প্রতি বৃহস্পতিবার ঘরে এসে দরজায় দাঁড়িয়ে মা বলে ডাকবে না আমাকে। আর কে আমাকে আদর করবে?’ বাবাকে একটু দেখতে চাই’— মোবাইলে বাবার ছবি বুকে নিয়ে এভাবেই বিলাপ করে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছে নিহত ইউসুফ মিয়ার ৭ বছরের একমাত্র শিশুকন্যা ইশরাত জাহান রাইজা। কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ইউসুফ মিয়া (৪০)।

জানা যায়, গত ২০ জুলাই ইউসুফ মিয়ার ছোট ভাই মোহাম্মদ খোকন অসুস্থ ছিল। তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। চিকিৎসাশেষে খোকনের সঙ্গে শনিআখড়ায় বাসায় যাচ্ছিল।

ওই দিন দুপুরে পথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ চলছিল আন্দোলনকারীদের। তারা রাস্তা পারাপার হয়ে শনিআখড়া ব্রিজ এলাকার দিকে যাওয়ার সময় ইউসুফ বুকে গুলিবিদ্ধ হন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

ইউসুফ পেশায় ছিলেন ঢাকা শহরের টিবিসির পণ্যসামগ্রী বিক্রির গাড়ির ড্রাইভার। গত ২২ জুলাই ঢাকা থেকে ইউসুফ মিয়ার লাশ আনা হয় নিজ গ্রামে। পরে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

ইউসুফ উপজেলার সাতঘর ইছাপুরা গ্রামের মৃত শহিদ মিয়ার ছেলে। পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে ইউসুফ মিয়া ছিলেন সবার বড়। কয়েক বছর আগে একই ইউনিয়নের রেহানা আক্তার রানুকে বিয়ে করেন তিনি। ইউসুফ মিয়ার ৭ বছর বয়সি ইশরাত জাহান রাইজা নামে একমাত্র শিশু কন্যাসন্তান রয়েছে।

রেহানা আক্তার রানু বলেন, ‘আমার জীবনের প্রদীপ মনে হয় নিভে গেল। আমি এখন অন্ধকারে পড়ে গেলাম, ‘আমি এখন কী করব। কিছুই বুঝতে পারছি না। একটি কন্যাসন্তান রেখে স্বামী এভাবে চলে গেল? আমি এখন অসহায় হয়ে পড়লাম।’

গোবিন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন শামীম বলেন, ‘আমার জানা মতে, ইউসুফ একজন খুবই গরিব পরিবারের সন্তান। তার বাবা নেই পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে ইউসুফ সবার বড় তার একমাত্র আয়ের ওপর চলে পরিবার। তার ৭ বছরের একটি শিশু সন্তান রয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, নিহত ইউসুফ মিয়ার পরিবারকে যেন সাহায্য করেন।’

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৫:১০:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৪
৫১৬ বার পড়া হয়েছে

কোটা আন্দোলন

‘বাবাকে দেখি না, ফোনও করে না’

আপডেট সময় ০৫:১০:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৪

‘বাবা কি আর আমাদের কাছে আসবে না। এগারো দিন হলো বাবাকে দেখি না, মোবাইলে ফোনও করে না। প্রতি বৃহস্পতিবার ঘরে এসে দরজায় দাঁড়িয়ে মা বলে ডাকবে না আমাকে। আর কে আমাকে আদর করবে?’ বাবাকে একটু দেখতে চাই’— মোবাইলে বাবার ছবি বুকে নিয়ে এভাবেই বিলাপ করে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছে নিহত ইউসুফ মিয়ার ৭ বছরের একমাত্র শিশুকন্যা ইশরাত জাহান রাইজা। কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ইউসুফ মিয়া (৪০)।

জানা যায়, গত ২০ জুলাই ইউসুফ মিয়ার ছোট ভাই মোহাম্মদ খোকন অসুস্থ ছিল। তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। চিকিৎসাশেষে খোকনের সঙ্গে শনিআখড়ায় বাসায় যাচ্ছিল।

ওই দিন দুপুরে পথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ চলছিল আন্দোলনকারীদের। তারা রাস্তা পারাপার হয়ে শনিআখড়া ব্রিজ এলাকার দিকে যাওয়ার সময় ইউসুফ বুকে গুলিবিদ্ধ হন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

ইউসুফ পেশায় ছিলেন ঢাকা শহরের টিবিসির পণ্যসামগ্রী বিক্রির গাড়ির ড্রাইভার। গত ২২ জুলাই ঢাকা থেকে ইউসুফ মিয়ার লাশ আনা হয় নিজ গ্রামে। পরে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

ইউসুফ উপজেলার সাতঘর ইছাপুরা গ্রামের মৃত শহিদ মিয়ার ছেলে। পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে ইউসুফ মিয়া ছিলেন সবার বড়। কয়েক বছর আগে একই ইউনিয়নের রেহানা আক্তার রানুকে বিয়ে করেন তিনি। ইউসুফ মিয়ার ৭ বছর বয়সি ইশরাত জাহান রাইজা নামে একমাত্র শিশু কন্যাসন্তান রয়েছে।

রেহানা আক্তার রানু বলেন, ‘আমার জীবনের প্রদীপ মনে হয় নিভে গেল। আমি এখন অন্ধকারে পড়ে গেলাম, ‘আমি এখন কী করব। কিছুই বুঝতে পারছি না। একটি কন্যাসন্তান রেখে স্বামী এভাবে চলে গেল? আমি এখন অসহায় হয়ে পড়লাম।’

গোবিন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন শামীম বলেন, ‘আমার জানা মতে, ইউসুফ একজন খুবই গরিব পরিবারের সন্তান। তার বাবা নেই পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে ইউসুফ সবার বড় তার একমাত্র আয়ের ওপর চলে পরিবার। তার ৭ বছরের একটি শিশু সন্তান রয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, নিহত ইউসুফ মিয়ার পরিবারকে যেন সাহায্য করেন।’