ঢাকা ০৩:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিআরটিএ কর্মকর্তা রফিকুলের ১৪ বছরের চাকরির ১১ বছরই ঢাকায়: পদায়ন-দলীয় বাণিজ্য-অবৈধ আয়ের অভিযোগ

বিশেষ প্রতিনিধি:

 

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) উপ-পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম (পরিচিতি নং ২০১১১০২১১৫) বিরুদ্ধে পদায়ন বাণিজ্য, দালাল সিন্ডিকেট পরিচালনা, অবৈধ আয় এবং রাজনৈতিক অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। ১৪ বছরের চাকরিজীবনে প্রায় ১১ বছরই তিনি ঢাকায় অবস্থান করেছেন, যা প্রশাসনিক রদবদলের নিয়মের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র জানায়, ২০১১ সালের ২২ ডিসেম্বর সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) হিসেবে বিআরটিএ সদর দপ্তরে যোগদান করেন রফিকুল। এরপর ৮ এপ্রিল ২০১২ থেকে ৩ অক্টোবর ২০১৩—পাবনা, ৭ অক্টোবর ২০১৩ থেকে ১২ অক্টোবর ২০১৪ চট্টগ্রাম মেট্রো সার্কেল, এরপর তাকে আবার সদর দপ্তরে ফেরত আনা হয়।

২০১৫ সালের ৮ মার্চ কুষ্টিয়ায় যোগদান করলেও কিছুদিন পরই আবার ঢাকা জেলায় বদলি হন। এরপর ২৫ এপ্রিল ২০১৬ থেকে ৬ জুলাই ২০২২ পর্যন্ত ঢাকাতেই তার অবস্থান ছিল।

পরবর্তীতে ২ নভেম্বর ২০২৪ থেকে ১৭ আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত সদর দপ্তরসহ ঢাকায় বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন।

স্বল্প বিরতির পর ৩ নভেম্বর ২০২4 বরিশালে পাঠানো হলেও মাত্র ৯ মাসের মাথায় ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে আবার ঢাকা মেট্রো-১ সার্কেলে বদলি হন।

অভিযোগ রয়েছে, স্বৈরাচারী সরকারের সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের “নেক নজর” থাকায় রফিকুল ইসলাম বারবার ঢাকায় পদায়নের সুযোগ পান।

সূত্র দাবি করে, রফিকুল ইসলাম রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে পদায়ন বাণিজ্য, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস, মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

চট্টগ্রাম মেট্রো সার্কেলে সহকারী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে উত্তরা মোটরসের ৮টি ডিলারের মাধ্যমে সিএনজি অটোরিকশার নতুন রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার নামে কয়েক কোটি টাকা ঘুষ নেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

আরেকটি সূত্র জানায়, হারুন অর রশিদ ওরফে রুবেল নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে সমন্বয় করে রফিকুল ইসলাম একটি শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। এই সিন্ডিকেটের কারণে সাধারণ গ্রাহকদের বিআরটিএ সেবার জন্য জিম্মি হয়ে পড়তে হতো।

অভিযোগ রয়েছে, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ ব্যবহার করে তিনি বিভিন্ন গুপ্ত মিছিল, প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক কর্মী দমন ও আন্দোলন ঠেকানোর কাজে অর্থায়ন করেছেন। এমনকি যুবলীগ–ছাত্রলীগের সঙ্গে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।

২০২৪ সালে তিনি সহকারী পরিচালক থেকে উপ-পরিচালক পদে পদোন্নতি পান। এর পেছনেও রাজনৈতিক প্রভাব ও “চাচার আশীর্বাদ” ছিল বলে অভিযোগকারীদের দাবি।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১১:৪২:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
৯৩৫ বার পড়া হয়েছে

বিআরটিএ কর্মকর্তা রফিকুলের ১৪ বছরের চাকরির ১১ বছরই ঢাকায়: পদায়ন-দলীয় বাণিজ্য-অবৈধ আয়ের অভিযোগ

আপডেট সময় ১১:৪২:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫

 

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) উপ-পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম (পরিচিতি নং ২০১১১০২১১৫) বিরুদ্ধে পদায়ন বাণিজ্য, দালাল সিন্ডিকেট পরিচালনা, অবৈধ আয় এবং রাজনৈতিক অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। ১৪ বছরের চাকরিজীবনে প্রায় ১১ বছরই তিনি ঢাকায় অবস্থান করেছেন, যা প্রশাসনিক রদবদলের নিয়মের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র জানায়, ২০১১ সালের ২২ ডিসেম্বর সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) হিসেবে বিআরটিএ সদর দপ্তরে যোগদান করেন রফিকুল। এরপর ৮ এপ্রিল ২০১২ থেকে ৩ অক্টোবর ২০১৩—পাবনা, ৭ অক্টোবর ২০১৩ থেকে ১২ অক্টোবর ২০১৪ চট্টগ্রাম মেট্রো সার্কেল, এরপর তাকে আবার সদর দপ্তরে ফেরত আনা হয়।

২০১৫ সালের ৮ মার্চ কুষ্টিয়ায় যোগদান করলেও কিছুদিন পরই আবার ঢাকা জেলায় বদলি হন। এরপর ২৫ এপ্রিল ২০১৬ থেকে ৬ জুলাই ২০২২ পর্যন্ত ঢাকাতেই তার অবস্থান ছিল।

পরবর্তীতে ২ নভেম্বর ২০২৪ থেকে ১৭ আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত সদর দপ্তরসহ ঢাকায় বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন।

স্বল্প বিরতির পর ৩ নভেম্বর ২০২4 বরিশালে পাঠানো হলেও মাত্র ৯ মাসের মাথায় ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে আবার ঢাকা মেট্রো-১ সার্কেলে বদলি হন।

অভিযোগ রয়েছে, স্বৈরাচারী সরকারের সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের “নেক নজর” থাকায় রফিকুল ইসলাম বারবার ঢাকায় পদায়নের সুযোগ পান।

সূত্র দাবি করে, রফিকুল ইসলাম রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে পদায়ন বাণিজ্য, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস, মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

চট্টগ্রাম মেট্রো সার্কেলে সহকারী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে উত্তরা মোটরসের ৮টি ডিলারের মাধ্যমে সিএনজি অটোরিকশার নতুন রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার নামে কয়েক কোটি টাকা ঘুষ নেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

আরেকটি সূত্র জানায়, হারুন অর রশিদ ওরফে রুবেল নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে সমন্বয় করে রফিকুল ইসলাম একটি শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। এই সিন্ডিকেটের কারণে সাধারণ গ্রাহকদের বিআরটিএ সেবার জন্য জিম্মি হয়ে পড়তে হতো।

অভিযোগ রয়েছে, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ ব্যবহার করে তিনি বিভিন্ন গুপ্ত মিছিল, প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক কর্মী দমন ও আন্দোলন ঠেকানোর কাজে অর্থায়ন করেছেন। এমনকি যুবলীগ–ছাত্রলীগের সঙ্গে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।

২০২৪ সালে তিনি সহকারী পরিচালক থেকে উপ-পরিচালক পদে পদোন্নতি পান। এর পেছনেও রাজনৈতিক প্রভাব ও “চাচার আশীর্বাদ” ছিল বলে অভিযোগকারীদের দাবি।