শিপইয়ার্ড সড়কে দুদকের অভিযানে নিম্নমানের কাজের প্রমাণ
খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ সময় নিম্নমানের কাজের প্রমাণ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
জানা গেছে, ৩ দশমিক ৭৭৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি ৪ লেনে প্রশস্ত করার জন্য ২০১৩ সালের ৭ মে একনেকে প্রকল্প অনুমোদন দেয় কেডিএ। শুরুতে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু না হওয়ায় ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ২৫৯ কোটি টাকায়।
২০২২ সালের ১২ জানুয়ারি কেডিএ চুক্তি দেয় **আতাউর রহমান লিমিটেড অ্যান্ড মাহাবুব ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড (জয়েন্ট ভেঞ্চার)**কে। ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে অর্ধেক কাজও শেষ হয়নি। অথচ ঠিকাদাররা ইতিমধ্যে ৭০ কোটি টাকার বিল তুলেছে।
অবশেষে জনভোগান্তির কারণে গত ৭ আগস্ট কেডিএ চুক্তি বাতিল করে। পরে উল্টো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কেডিএর বিরুদ্ধে মামলা করে এবং ৬০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ আদায়ের দাবি জানায়।
সংবাদমাধ্যমে অনিয়ম প্রকাশিত হওয়ার পর দুদক সরেজমিনে অভিযান চালায়। দুদকের খুলনার উপপরিচালক মো. আব্দুল ওয়াদুদ জানান, “৩ দশমিক ৭৭৮ কিলোমিটারের শেষ ৩০০ মিটার সড়ক আমরা পরীক্ষা করেছি। কেডিএর মেজারমেন্ট বইতে পুরো কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলা হলেও খুঁড়ে দেখা যায় নির্ধারিত বালু, সাব-বেজ ও ইট-খোয়া কিছুই নেই। অথচ ওই অংশের বিল ঠিকাদার তুলে নিয়েছে।”
তিনি আরও জানান, প্রকৌশলীরা বিস্তারিত পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন জমা দেবেন। পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে দুদকের সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রকল্প-সংক্রান্ত নথি, বিল পরিশোধের নোটিশসহ বিভিন্ন কাগজ সংগ্রহ করা হয়েছে। “কাগজপত্রের সঙ্গে বাস্তবতার অনেক ফারাক রয়েছে।”
তবে কেডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক আরমান হোসেন দাবি করেন, “শেষ ৩০০ মিটারের কাজ শেষ হয়নি, তাই সেখানে ত্রুটি থাকতে পারে। তবে বাকি সাড়ে তিন কিলোমিটার অংশ ঠিক আছে।”