ঢাকা ১২:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীর ৩৮৯ প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষকবিহীন

মো: গোলাম কিবরিয়া, রাজশাহী প্রতিনিধি::

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী জেলার এক-তৃতীয়াংশের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে প্রধান শিক্ষক ছাড়া। জেলার ১,০৫৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৮৯টির প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য, যার মধ্যে ৬১টি বিদ্যালয়ের পদ মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় আটকা আছে।

বছরের পর বছর ধরে পদোন্নতি ও নিয়োগ বন্ধ থাকায় সংকট আরও গভীর হয়েছে। জেলার ৯টি উপজেলা এবং মহানগর এলাকার প্রায় প্রতিটি প্রান্তে এই সমস্যা বিরাজ করছে।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক অবস্থা বাগমারা উপজেলায়, যেখানে ৯৭টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। এছাড়া গোদাগাড়ী ৭১টি, তানোর ৬২টি, চারঘাট ৩৮টি, পুঠিয়া ২৭টি, বাঘা ২২টি, পবা ২১টি, দুর্গাপুর ২১টি, মোহনপুর ২০টি এবং বোয়ালিয়া ১০টি বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষকবিহীন। এই বিদ্যালয়গুলোতে সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

পবা উপজেলার ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নফুরা খাতুন বলেন, “প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে আমরা দায়িত্ব নিচ্ছি, কিন্তু আমাদের হাতে পূর্ণ ক্ষমতা নেই। মিড-ডে মিল, সরকারি ডেটা আপলোড, সভা, অভিভাবক সংযোগ, সবকিছু সামলাতে হচ্ছে। পাঠদানে মনোযোগ দেওয়া কঠিন।”

পবার কালুপাড়া মাধাইপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাসুমা আক্তার যোগ করেন, “ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করি, কিন্তু একজন সহকারী শিক্ষকের পক্ষে প্রশাসনিক সব কাজ সামলানো কঠিন। পূর্ণ ক্ষমতা না থাকায় জরুরি সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না।”

রাজশাহী জেলা সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন অর রশিদ জানান, “২০১০ সালের পর সরাসরি প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। ২০১৮ সালে কিছু সহকারী শিক্ষককে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তারা এখন অবসর গ্রহণ করেছেন। ফলে প্রধান শিক্ষক পদে ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে।”

রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) টুকটুক তালুকদার বলেন, “আমরা নিয়মিত শূন্য পদের তালিকা পাঠাচ্ছি, কিন্তু পদোন্নতি না হওয়ায় সংকট কাটছে না।”

রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম আনোয়ার হোসেন বলেন, “সরকার পদোন্নতি বা নিয়োগ না দিলে আমার কিছু করার নেই। এভাবেই আমাদের বিদ্যালয় চলছে।”

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০১:৩৭:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫
৫১৮ বার পড়া হয়েছে

রাজশাহীর ৩৮৯ প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষকবিহীন

আপডেট সময় ০১:৩৭:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫

রাজশাহী জেলার এক-তৃতীয়াংশের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে প্রধান শিক্ষক ছাড়া। জেলার ১,০৫৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৮৯টির প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য, যার মধ্যে ৬১টি বিদ্যালয়ের পদ মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় আটকা আছে।

বছরের পর বছর ধরে পদোন্নতি ও নিয়োগ বন্ধ থাকায় সংকট আরও গভীর হয়েছে। জেলার ৯টি উপজেলা এবং মহানগর এলাকার প্রায় প্রতিটি প্রান্তে এই সমস্যা বিরাজ করছে।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক অবস্থা বাগমারা উপজেলায়, যেখানে ৯৭টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। এছাড়া গোদাগাড়ী ৭১টি, তানোর ৬২টি, চারঘাট ৩৮টি, পুঠিয়া ২৭টি, বাঘা ২২টি, পবা ২১টি, দুর্গাপুর ২১টি, মোহনপুর ২০টি এবং বোয়ালিয়া ১০টি বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষকবিহীন। এই বিদ্যালয়গুলোতে সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

পবা উপজেলার ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নফুরা খাতুন বলেন, “প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে আমরা দায়িত্ব নিচ্ছি, কিন্তু আমাদের হাতে পূর্ণ ক্ষমতা নেই। মিড-ডে মিল, সরকারি ডেটা আপলোড, সভা, অভিভাবক সংযোগ, সবকিছু সামলাতে হচ্ছে। পাঠদানে মনোযোগ দেওয়া কঠিন।”

পবার কালুপাড়া মাধাইপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাসুমা আক্তার যোগ করেন, “ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করি, কিন্তু একজন সহকারী শিক্ষকের পক্ষে প্রশাসনিক সব কাজ সামলানো কঠিন। পূর্ণ ক্ষমতা না থাকায় জরুরি সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না।”

রাজশাহী জেলা সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন অর রশিদ জানান, “২০১০ সালের পর সরাসরি প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। ২০১৮ সালে কিছু সহকারী শিক্ষককে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তারা এখন অবসর গ্রহণ করেছেন। ফলে প্রধান শিক্ষক পদে ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে।”

রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) টুকটুক তালুকদার বলেন, “আমরা নিয়মিত শূন্য পদের তালিকা পাঠাচ্ছি, কিন্তু পদোন্নতি না হওয়ায় সংকট কাটছে না।”

রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম আনোয়ার হোসেন বলেন, “সরকার পদোন্নতি বা নিয়োগ না দিলে আমার কিছু করার নেই। এভাবেই আমাদের বিদ্যালয় চলছে।”