ঢাকা ০৩:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারের প্রতিটি ফোর্স জনগণকে মূর্খ মনে করছে : ইফতেখারুজ্জামান

চেকপোস্ট প্রতিবেদক::

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সকল প্রতিষ্ঠান মিথ্যাচার, প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। প্রতিটি ফোর্সই প্রতিটি বিষয়ে জনগণকে মূর্খ মনে করেছে। প্রতিটি কথায় তারা নিজেরাই মূর্খের পরিচয় দিয়েছে, সেটা তারা ভুলে গেছে। মিথ্যাচার করে সরকার পরিচালনা, রাষ্ট্র পরিচালনা থেকে সরে আসতে হবে। মিথ্যাচার দেশবাসী বুঝে গেছে।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বিকেল ৩টায় ডিএমপির গোয়েন্দা কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তিনি।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জবাবদিহিবিহীন ক্ষমতার ঊর্ধ্বে অবস্থান করে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের নামে যে সংস্থাগুলো কাজ করছে এমনই একটি প্রতিষ্ঠানের সামনে দাঁড়িয়ে আমরা আজ কথা বলছি। সেই সংস্থাসহ তারা স্বাধীন দেশে বাস করে ছাত্র সমাজ ও জনতার শক্তি এবং তাদের মত, অজেয় শক্তির বিরুদ্ধে গিয়ে দমন নিপীড়ন চালিয়েছে। এমনকি এসব প্রতিষ্ঠান মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়েছে, প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। প্রতিটি ফোর্সই প্রতিটি বিষয়ে জনগণকে মূর্খ মনে করেছে। এর মধ্য দিয়ে প্রতিটি কথায় যে নিজেদের মূর্খের পরিচয় দিয়েছে সেটা তারা ভুলে গেছে। মূর্খতা ও মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে যে কাজগুলো করেছে সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। আইনের লঙ্ঘন করেছে।

তিনি বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পেশাগত উৎকর্ষতার কথা তারা বলে থাকেন। পেশাগত প্রশিক্ষণের বাইরে গিয়ে তারা আমাদের প্রতারিত করার চেষ্টা করেছেন। তাদের মানদণ্ডে দেশবাসীকে বিচার করার কোনো সুযোগ নেই। আমি বলব, তারা এটা করতে পেরেছে এ কারণে তাদের মধ্যে একটি ধারণার সৃষ্টি হয়েছে, শুধুমাত্র এই ছয়জনকে আটকের বিষয়টা না। সার্বিকভাবে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, এর মূল বিষয়টা হলো দীর্ঘ একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে তারা নিজেরা ধারণা সৃষ্টি করেছে, তারা বিচারহীনতা চিরদিন উপভোগ করতে পারবে।

যদি তাই হয়, তাহলে আপনি কেন মিথ্যাচার করছেন? বন্ধ করুন। আপনি বলেন, আমি নির্বিচারে ছাত্রদের গুলি করেছি, নির্বিচারে আটক করে রেখেছি। নির্বিচারে সারাদেশে অসংখ্য মানুষ, শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকদের সঙ্গে অন্যায় করেছি, অধিকার হরণ করেছি। ছাত্রদের সম্পূর্ণ যৌক্তিক ও নৈতিকতায় বলিয়ান যে দাবি যেটি সরকারও ঘোষণা করেছে। সেই আন্দোলনে নির্বিচারে অত্যাচার করেছি।

অর্থনীতিবিদ ও জননীতি বিশ্লেষক সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের ছেড়ে দেওয়ার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। বিনা বিচারে তাদের আটকে রাখা হয়েছিল। বলা হয়ে ছিল আদালত বললে পরে ছাড়া হবে, এটা একটা অপপরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। আমরা শুনেছি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের ছেড়ে দিয়েছে। তাদের মুক্তি হয়েছে এতে আমরা খুশি। কিন্তু এখনও অনেক ছাত্র, শিক্ষক ও সাধারণ জনগণ বিনা বিচারে আটকে আছে, সে জন্য আমরা সন্তুষ্ট নই।

তিনি বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে যে যেখানে বিনা বিচারে আটক আছে তাদের সবাইকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। এটা আমাদের প্রধান দাবি। দ্বিতীয় দাবি, এই আন্দোলনে এ পর্যন্ত যেভাবে দেশের নিরপরাধ মানুষ মারা গেছেন, তাদের সকলের বিচার করতে হবে। এই বিচারের জন্য জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করতে হবে। স্কুল-কলেজ খুলে দিতে হবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সেখান থেকে সরিয়ে দিতে হবে। দেশে ইন্টারনেটের অবাধ সুষ্ঠু ব্যবস্থা করতে হবে। দেশে আইন সুরক্ষার পরিবেশ দ্রুত সৃষ্টি না করা হলে, এটা বাংলাদেশের জন্য বড় সমস্যা হবে।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আপনারা বলেছেন এই ঘটনার ফলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়নি। ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে সরকারের। আমার ট্যাক্সের টাকায় বন্দুক কেনা হয়েছে। আমার ট্যাক্সের টাকায় গুলি কেনা হয়েছে। আমার ট্যাক্সের টাকায় কেনা গুলি ও বন্দুক দিয়ে মানুষ মারার জন্য বাংলাদের স্বাধীন হয়নি। এটা কোনো অবস্থায় গ্রহণযোগ্য নয়।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ডিবির কাছে থাকলে না কি নিরাপত্তাবোধ করে। আসলে আমাদের নিরাপত্তার সংজ্ঞাটা দেবেন? আমরা সংবিধানে তুলে দেব! শিক্ষার্থীদের হেফাজতে রাখার আইনি সংজ্ঞাটা কী? শিক্ষার্থীদের আটকে রাখার ক্ষমতা কোথায় দেওয়া হয়েছে? সংবিধানের কোন আইনে আটকে রাখার কথা হয়েছে?

তিনি বলেন, আমরা এখানে আসার আগে ছয়জন সমন্বয়ককে ছেড়ে দিয়েছেন বলে শুনেছি। আমরা এখনো জানি না তারা পরিবারের কাছে গিয়েছে কি না। যে ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তারা যেন মুক্ত পরিবেশে কাজ করতে পারে। তাদের বাসায় প্রহরায় কাউকে রাখবেন না।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমাদের যখন ইচ্ছা তুলে আনবেন, যতদিন ইচ্ছা আটকে রাখবেন, নুডুলস খাওয়াবেন, পোলাও, রুটি খাইয়ে আবার পত্র-পত্রিকায় দেবেন। এগুলো কাদের টাকায় খাওয়ান? আমরা জনগণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনোদিন মুখোমুখি হতে চাই না। আমাদের নিরাপত্তার প্রয়োজন হলে আমরা আপনাদের কাছে যাব৷ গায়েবিভাবে আমাদের বাসা থেকে তুলে আনবেন, সেই আইন-ক্ষমতা আপনাদের দেওয়া হয়নি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, প্রয়াত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্ত্রী শিরীন হক, বাংলাদেশের বেসরকারি সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম ইন বাংলাদেশের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান মির্জা তাসলিমা সুলতানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের্ অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক রুশাদ ফরিদী, সরকারি সংস্থা উবিনীগ (উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা) এর নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ নূর, সদস্য রুমি প্রভা।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৮:২৪:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪
৫০৬ বার পড়া হয়েছে

সরকারের প্রতিটি ফোর্স জনগণকে মূর্খ মনে করছে : ইফতেখারুজ্জামান

আপডেট সময় ০৮:২৪:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সকল প্রতিষ্ঠান মিথ্যাচার, প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। প্রতিটি ফোর্সই প্রতিটি বিষয়ে জনগণকে মূর্খ মনে করেছে। প্রতিটি কথায় তারা নিজেরাই মূর্খের পরিচয় দিয়েছে, সেটা তারা ভুলে গেছে। মিথ্যাচার করে সরকার পরিচালনা, রাষ্ট্র পরিচালনা থেকে সরে আসতে হবে। মিথ্যাচার দেশবাসী বুঝে গেছে।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বিকেল ৩টায় ডিএমপির গোয়েন্দা কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তিনি।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জবাবদিহিবিহীন ক্ষমতার ঊর্ধ্বে অবস্থান করে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের নামে যে সংস্থাগুলো কাজ করছে এমনই একটি প্রতিষ্ঠানের সামনে দাঁড়িয়ে আমরা আজ কথা বলছি। সেই সংস্থাসহ তারা স্বাধীন দেশে বাস করে ছাত্র সমাজ ও জনতার শক্তি এবং তাদের মত, অজেয় শক্তির বিরুদ্ধে গিয়ে দমন নিপীড়ন চালিয়েছে। এমনকি এসব প্রতিষ্ঠান মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়েছে, প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। প্রতিটি ফোর্সই প্রতিটি বিষয়ে জনগণকে মূর্খ মনে করেছে। এর মধ্য দিয়ে প্রতিটি কথায় যে নিজেদের মূর্খের পরিচয় দিয়েছে সেটা তারা ভুলে গেছে। মূর্খতা ও মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে যে কাজগুলো করেছে সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। আইনের লঙ্ঘন করেছে।

তিনি বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পেশাগত উৎকর্ষতার কথা তারা বলে থাকেন। পেশাগত প্রশিক্ষণের বাইরে গিয়ে তারা আমাদের প্রতারিত করার চেষ্টা করেছেন। তাদের মানদণ্ডে দেশবাসীকে বিচার করার কোনো সুযোগ নেই। আমি বলব, তারা এটা করতে পেরেছে এ কারণে তাদের মধ্যে একটি ধারণার সৃষ্টি হয়েছে, শুধুমাত্র এই ছয়জনকে আটকের বিষয়টা না। সার্বিকভাবে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, এর মূল বিষয়টা হলো দীর্ঘ একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে তারা নিজেরা ধারণা সৃষ্টি করেছে, তারা বিচারহীনতা চিরদিন উপভোগ করতে পারবে।

যদি তাই হয়, তাহলে আপনি কেন মিথ্যাচার করছেন? বন্ধ করুন। আপনি বলেন, আমি নির্বিচারে ছাত্রদের গুলি করেছি, নির্বিচারে আটক করে রেখেছি। নির্বিচারে সারাদেশে অসংখ্য মানুষ, শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকদের সঙ্গে অন্যায় করেছি, অধিকার হরণ করেছি। ছাত্রদের সম্পূর্ণ যৌক্তিক ও নৈতিকতায় বলিয়ান যে দাবি যেটি সরকারও ঘোষণা করেছে। সেই আন্দোলনে নির্বিচারে অত্যাচার করেছি।

অর্থনীতিবিদ ও জননীতি বিশ্লেষক সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের ছেড়ে দেওয়ার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। বিনা বিচারে তাদের আটকে রাখা হয়েছিল। বলা হয়ে ছিল আদালত বললে পরে ছাড়া হবে, এটা একটা অপপরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। আমরা শুনেছি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের ছেড়ে দিয়েছে। তাদের মুক্তি হয়েছে এতে আমরা খুশি। কিন্তু এখনও অনেক ছাত্র, শিক্ষক ও সাধারণ জনগণ বিনা বিচারে আটকে আছে, সে জন্য আমরা সন্তুষ্ট নই।

তিনি বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে যে যেখানে বিনা বিচারে আটক আছে তাদের সবাইকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। এটা আমাদের প্রধান দাবি। দ্বিতীয় দাবি, এই আন্দোলনে এ পর্যন্ত যেভাবে দেশের নিরপরাধ মানুষ মারা গেছেন, তাদের সকলের বিচার করতে হবে। এই বিচারের জন্য জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করতে হবে। স্কুল-কলেজ খুলে দিতে হবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সেখান থেকে সরিয়ে দিতে হবে। দেশে ইন্টারনেটের অবাধ সুষ্ঠু ব্যবস্থা করতে হবে। দেশে আইন সুরক্ষার পরিবেশ দ্রুত সৃষ্টি না করা হলে, এটা বাংলাদেশের জন্য বড় সমস্যা হবে।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আপনারা বলেছেন এই ঘটনার ফলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়নি। ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে সরকারের। আমার ট্যাক্সের টাকায় বন্দুক কেনা হয়েছে। আমার ট্যাক্সের টাকায় গুলি কেনা হয়েছে। আমার ট্যাক্সের টাকায় কেনা গুলি ও বন্দুক দিয়ে মানুষ মারার জন্য বাংলাদের স্বাধীন হয়নি। এটা কোনো অবস্থায় গ্রহণযোগ্য নয়।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ডিবির কাছে থাকলে না কি নিরাপত্তাবোধ করে। আসলে আমাদের নিরাপত্তার সংজ্ঞাটা দেবেন? আমরা সংবিধানে তুলে দেব! শিক্ষার্থীদের হেফাজতে রাখার আইনি সংজ্ঞাটা কী? শিক্ষার্থীদের আটকে রাখার ক্ষমতা কোথায় দেওয়া হয়েছে? সংবিধানের কোন আইনে আটকে রাখার কথা হয়েছে?

তিনি বলেন, আমরা এখানে আসার আগে ছয়জন সমন্বয়ককে ছেড়ে দিয়েছেন বলে শুনেছি। আমরা এখনো জানি না তারা পরিবারের কাছে গিয়েছে কি না। যে ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তারা যেন মুক্ত পরিবেশে কাজ করতে পারে। তাদের বাসায় প্রহরায় কাউকে রাখবেন না।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমাদের যখন ইচ্ছা তুলে আনবেন, যতদিন ইচ্ছা আটকে রাখবেন, নুডুলস খাওয়াবেন, পোলাও, রুটি খাইয়ে আবার পত্র-পত্রিকায় দেবেন। এগুলো কাদের টাকায় খাওয়ান? আমরা জনগণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনোদিন মুখোমুখি হতে চাই না। আমাদের নিরাপত্তার প্রয়োজন হলে আমরা আপনাদের কাছে যাব৷ গায়েবিভাবে আমাদের বাসা থেকে তুলে আনবেন, সেই আইন-ক্ষমতা আপনাদের দেওয়া হয়নি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, প্রয়াত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্ত্রী শিরীন হক, বাংলাদেশের বেসরকারি সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম ইন বাংলাদেশের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান মির্জা তাসলিমা সুলতানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের্ অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক রুশাদ ফরিদী, সরকারি সংস্থা উবিনীগ (উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা) এর নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ নূর, সদস্য রুমি প্রভা।