ঢাকা ০৫:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৯ অগাস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডুমুরিয়ায় চেয়ারম্যান বুলুর অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্তে মাঠে প্রশাসন

মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা::

ছবি: সংগৃহীত

খুলনার ডুমুরিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী হুমায়ুন কবীর বুলুর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তে নেমেছে প্রশাসন।

গাজী হুমায়ুন কবীর বুলু বর্তমানে ডুমুরিয়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে জয়ী হন। এরপর থেকে প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহলের সহায়তায় এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে আসছেন।

অভিযোগ রয়েছে, চেয়ারম্যান বুলু পরিষদের সদস্যদের মতামত ছাড়াই এককভাবে প্রকল্প অনুমোদন করেন, ভিজিএফ ও ভিজিডি কার্ড তার নিজস্ব লোকদের মাধ্যমে বিতরণ করেন এবং ট্রেড লাইসেন্স, চৌকিদারি ট্যাক্সসহ বিভিন্ন প্রত্যয়নপত্র এখনও এনালগ পদ্ধতিতে দিয়ে থাকেন, যার সঠিক লেজার বা হিসাব নেই।

এছাড়া সরকারি অর্থে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের ভেতরে একাধিক দোকান নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের অগ্রিম টাকা নিয়ে নিজেই ভাড়া আদায় করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি গত ছয় মাসের চালও আত্মসাৎ করেছেন বলে স্থানীয়রা দাবি করেছেন।

এসব অভিযোগে ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকাবাসী সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও), জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। নয়জন ইউপি সদস্যও চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি করেছেন।

দোকান ভাড়াটিয়া রবিউল ইসলাম বাবু জানান, “১৪ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে দোকান ভাড়া নিয়েছি, মাসিক ভাড়া ৩ হাজার ১০০ টাকা। ফটিক সাহার কাছ থেকেও দেড় লাখ টাকা অগ্রিম নেওয়া হয়েছে।”

ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, “সম্প্রতি আরাজি ডুমুরিয়া এলাকায় রাস্তার কাজে অনিয়ম করায় এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেছে। পরে নতুন করে টাকা দিয়ে ১৪০ ফুট রাস্তার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।” ইউপি সদস্য গফফার গাজী ও নাজমুল হোসেন বকুলের অভিযোগ-চেয়ারম্যান সব কিছু একাই করেন, কারো মতামত নেন না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মাদ আল আমিন বলেন, “অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তবে চেয়ারম্যান গাজী হুমায়ুন কবীর বুলু এসব অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, “আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।”

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১০:২১:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ অগাস্ট ২০২৫
৫১৪ বার পড়া হয়েছে

ডুমুরিয়ায় চেয়ারম্যান বুলুর অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্তে মাঠে প্রশাসন

আপডেট সময় ১০:২১:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ অগাস্ট ২০২৫

খুলনার ডুমুরিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী হুমায়ুন কবীর বুলুর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তে নেমেছে প্রশাসন।

গাজী হুমায়ুন কবীর বুলু বর্তমানে ডুমুরিয়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে জয়ী হন। এরপর থেকে প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহলের সহায়তায় এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে আসছেন।

অভিযোগ রয়েছে, চেয়ারম্যান বুলু পরিষদের সদস্যদের মতামত ছাড়াই এককভাবে প্রকল্প অনুমোদন করেন, ভিজিএফ ও ভিজিডি কার্ড তার নিজস্ব লোকদের মাধ্যমে বিতরণ করেন এবং ট্রেড লাইসেন্স, চৌকিদারি ট্যাক্সসহ বিভিন্ন প্রত্যয়নপত্র এখনও এনালগ পদ্ধতিতে দিয়ে থাকেন, যার সঠিক লেজার বা হিসাব নেই।

এছাড়া সরকারি অর্থে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের ভেতরে একাধিক দোকান নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের অগ্রিম টাকা নিয়ে নিজেই ভাড়া আদায় করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি গত ছয় মাসের চালও আত্মসাৎ করেছেন বলে স্থানীয়রা দাবি করেছেন।

এসব অভিযোগে ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকাবাসী সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও), জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। নয়জন ইউপি সদস্যও চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি করেছেন।

দোকান ভাড়াটিয়া রবিউল ইসলাম বাবু জানান, “১৪ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে দোকান ভাড়া নিয়েছি, মাসিক ভাড়া ৩ হাজার ১০০ টাকা। ফটিক সাহার কাছ থেকেও দেড় লাখ টাকা অগ্রিম নেওয়া হয়েছে।”

ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, “সম্প্রতি আরাজি ডুমুরিয়া এলাকায় রাস্তার কাজে অনিয়ম করায় এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেছে। পরে নতুন করে টাকা দিয়ে ১৪০ ফুট রাস্তার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।” ইউপি সদস্য গফফার গাজী ও নাজমুল হোসেন বকুলের অভিযোগ-চেয়ারম্যান সব কিছু একাই করেন, কারো মতামত নেন না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মাদ আল আমিন বলেন, “অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তবে চেয়ারম্যান গাজী হুমায়ুন কবীর বুলু এসব অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, “আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।”