যারা মুক্তিযুদ্ধ মানে না, তারাই জুলাই সনদে হতাশ : আহমেদ আযম খান
“যারা মুক্তিযুদ্ধ মেনে নিতে পারেনি, তারাই এখন জুলাই সনদ নিয়ে হতাশ। যারা ১৯৭১ সালকে অস্বীকার করে, তারাই আজ পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে,” এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান।
৬ আগস্ট (মঙ্গলবার) বিকেলে খুলনার শিববাড়ি মোড়ে মহানগর ও জেলা বিএনপির আয়োজনে বিজয় মিছিল পূর্বক এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আহমেদ আযম খান বলেন, “কেউ কেউ এখন বলে, পিআর (প্রপার রিপ্রেজেন্টেশন) না হলে নির্বাচন হতে দেবো না। তারাই মুক্তিযুদ্ধের সময় বলেছিল, দেশ স্বাধীন হতে দেবো না। আমি স্পষ্ট করে বলছি, ষড়যন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসুন। আগামী নির্বাচন জনগণের ভোটেই হবে।”
তিনি সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, “দেশের কোটি কোটি মানুষ আপনার পাশে আছে। আপনি আপনার সিদ্ধান্তে অটল থাকুন।”
বিএনপি নেতার ভাষ্য, “আগামী নির্বাচন আর ‘আমি-ডামি’ হবে না, দিনের ভোট রাতে হবে না। একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বিএনপি যুগোপযোগী সংস্কার প্রক্রিয়া শেষ করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “তারেক রহমান গণ-অভ্যুত্থানের মহানায়ক ছিলেন। তার নেতৃত্বেই আজ ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ সম্ভব হয়েছে। দেশের জনগণ এবার ভোট দিতে চায়, অবাধ নির্বাচন চায়, সমৃদ্ধ অর্থনীতি চায়। কিন্তু নির্বাচনের কথা উঠলেই একটি দল নানা অজুহাত তোলে, কখনো বলে সংস্কার হয়নি, কখনো বলে পিআর ছাড়া হবে না।”
সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেন, “খুলনার শিল্প ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হলে বিএনপিকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনতে হবে।”
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাড. শফিকুল আলম মনা, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন, সদস্য সচিব আবু হোসেন বাবু, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. মোমরেজুল ইসলাম, রেহানা ঈসা, সৈয়দা নার্গিস আলী, ইঞ্জিনিয়ার নুরুল ইসলাম বাচ্চু, মজিবর রহমান, ফরিদ আহমেদ মোল্লা, আসলাম পারভেজ, এজাজুর রহমান শামীম প্রমুখ।
সমাবেশের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন সদর থানা বিএনপির সভাপতি কেএম হুমায়ুন কবীর। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাদী, চৌধুরী হাসানুর রশীদ মিরাজ ও মাসুদ পারভেজ বাবু।
নেতারা খুলনার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “খুলনা খুনের নগরীতে পরিণত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে। অবিলম্বে খুন, চুরি, ছিনতাই ও মাদক নির্মূলে ব্যবস্থা নিতে হবে।”
সমাবেশ শেষে একটি বিজয় মিছিল শিববাড়ি মোড় থেকে শুরু হয়ে যশোর রোড, ফেরিঘাট, খানজাহান আলী রোড হয়ে রয়্যাল মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। জাতীয় ও দলীয় পতাকা, ব্যানার, রঙ-বেরঙের প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে মিছিলে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন। শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন ও বেলুন উড়িয়ে মিছিলের উদ্বোধন করেন নেতৃবৃন্দ।