ডুমুরিয়ায় অসুস্থ ও মরা গরু জবাই করে বিক্রির অভিযোগে ৩ কসাইকে কারাদণ্ড
খুলনার ডুমুরিয়ায় অসুস্থ ও মরা গরু জবাই করে বিক্রির অভিযোগে তিনজন কসাইকে ভ্রাম্যমাণ আদালত কারাদণ্ড দিয়েছে। এসময় প্রায় ১২ মন জব্দকৃত মাংস মাটিতে পুড়িয়ে নষ্ট করা হয়।
আজ ৩ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার নরনিয়া গ্রামে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অপ্রতিম কুমার চক্রবর্তী এ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আশফাকুল কবির, প্রাণী সম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডাঃ পপি রায়, থানা পুলিশের এসআই শামীম হাওলাদার ও মিজানুর রহমান, চুকনগর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মোঃ শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সরদার বিল্লাল হোসেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন চাকুন্দিয়া গ্রামের মৃত কাশেম গাজীর ছেলে মোস্তাক গাজী (৪৫), বাদুড়িয়া গ্রামের মৃত ভেলু সরদারের ছেলে ইয়াকুব সরদার (৫২), কেশবপুর এলাকার জাকির মোড়লের ছেলে সাইফুল ইসলাম মোড়ল (২২)।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে তারা অসুস্থ ও মরা গরু ক্রয় করে খুলনা সহ বরিশাল, গোপালগঞ্জ ও পিরোজপুর সদরের বিভিন্ন নামি-দামী হোটেলে বিক্রি করে আসছে। চুকনগর, যশোর সড়কের পাশে নরনিয়া গ্রামে আবুল কালামের নির্জন স্থানে সেমি পাকা একটি ঘর নির্মাণ করে সেখানে কসাইয়ের কাজ চালিয়ে আসছেন তারা। স্থানীয়দের অভিযোগ, অসুস্থ ও মরা গরু কম মূল্যে ক্রয় করে দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যবসা পরিচালনা করছেন এবং কিছু প্রভাবশালী অসাধু ব্যক্তির সঙ্গে জড়িত।
তাদের মূল হোতা গোপালগঞ্জের নাসির উদ্দিন বলে জানা গেছে। অভিযানের সময় তিনি এবং তার প্রতিনিধি কেশবপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের ইমান আলী পলাতক ছিলেন। শনিবার রাতে তারা তিনটি গরু জবাই করেন, যা বিভিন্ন হোটেলে সরবরাহের কথা ছিল। সদ্য জবাইকৃত গরুর মধ্যে একটি মৃত এবং দুটি অসুস্থ ছিল, যা উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সনাক্ত করেন। স্থানীয় জনগণের সহায়তায় রাতেই মাংস উদ্ধার করে অভিযুক্তদের আটক করা হয়। বড় ডীপ ফ্রিজেও গরুর মাংস পাওয়া গেছে।
ডুমুরিয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) অপ্রতিম কুমার চক্রবর্তী বলেন, “কসাইদের বিরুদ্ধে অসুস্থ ও মরা গরু জবাইয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে এবং তারা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা খুলনা সহ বিভিন্ন জেলা শহরের হোটেলে এ ধরনের মাংস বিক্রি করে আসছিল। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ (২০০৯) আইনে প্রত্যেককে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।”
স্থানীয় আটলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ হেলাল উদ্দিন বলেন, “চুকনগর বাজারে ৩০টির বেশি ভাতের হোটেল রয়েছে, যাদের মধ্যে অনেক নামি দামি হোটেলও রয়েছে। আমরা কী খাচ্ছি তা জানিনা। এজন্য আমরা উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে চুকনগর বাজারে একটি আধুনিক কসাইখানা স্থাপনের দাবি করছি।”