ঢাকা ০১:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ১৬ বছরের শিক্ষার্থী কারাগারে

চেকপোস্ট ডেস্ক::

বন্ধুদের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মিছিলে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন রংপুর পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের ছাত্র আলফি শাহরিয়ার মাহিম (১৬)। তাকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ হত্যা মামলার আসামি হিসেবে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

আলফি শাহরিয়ার মাহিম এখন রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছে। পুলিশের দাবি, ওই হত্যা মামলায় জড়িত ছিল তাই গ্রেফতার করা হয়েছে।

আলফি শাহরিয়ার মাহিমের পরিবারের দাবি, গত ১৬ জুলাই বৃহস্পতিবার কোটা সংস্কার আন্দোলনের মিছিল রংপুর জিলা স্কুলের গেট থেকে বের হয়। ওই দিন মাহিম তার স্কুলে গিয়েছিল স্কুল ড্রেস পড়েই সে বন্ধুদের সঙ্গে ওই মিছিলে মিশে যায়। পড়ে তার কোনো খোঁজ পাচ্ছিলেন না পরিবারের লোকজন, অবশেষে হাসপাতাল, থানা পুলিশ সব জায়গায় গিয়ে তার কোনো খোঁজ মেলেনি।

পুলিশ গত ১৮ জুলাই তাজহাট থানার সহিংস ঘটনার সময় আলফি শাহরিয়ার মাহিমকে মডার্ন মোড় থেকে গ্রেফতার করে তাজহাট থানার ভেতর পেছনে হাত বেঁধে মেঝেতে বসিয়ে রাখে। যখন সেখানে হামলাকারীরা ব্যাপক সহিংসতায় থানায় হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে তখন পুলিশসহ তাকে পুলিশের গাড়িতে রংপুর কোতোয়ালি মেট্রোপলিটন থানায় নেওয়া হয়।

আলফি শাহরিয়ার মাহিমের বড় বোন সানজিনা আকতার স্নেহার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানা গেছে- গভীর রাতে একটি ফোন কলে পরিবারের কাছে খবর আসে ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে জানানো হয়- ‘আপনার ছেলে আমাদের হেফাজতে আছে জানাজানি করিয়েন না তাতে ছেলের ক্ষতি হবে, তাকে আগামীকাল সকালে ছেড়ে দেওয়া হবে চিন্তার কিছু নেই।’ কিন্তু পরের দিন পুলিশের কাছে ১৯ জুলাই সকালে আমরা খোঁজ নিলে তারা অস্বীকার করে বলে তাদের কাছে এই নামে কেউ নেই। এরপর আনুমানিক বিকাল সাড়ে ৪টায় কোর্ট থেকে কল আসে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আমরা কোর্ট থেকে নথিপত্র নিয়ে জানলাম তাকে আবু সাইদ ভাইয়ের হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সেদিন থেকে বারবার কারাগারের দরজা থেকে ফিরে এসেছি, একটাবার দেখা তো দূর তার কণ্ঠও শুনতে দেয়নি কেউ। মেট্রো কোর্ট তার মামলা কিছুতেই শিশু কোর্টে দিতে চায়নি; অনেক চেষ্টা করে গত ৩০ জুলাই শিশু কোর্টে নেওয়া হলে ডেট দেয় আগামী ৪ আগস্ট। আমার ছোট ভাই মো. আলফি শাহরিয়ার মাহিমকে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ; তার বয়স ১৬ বছর ১০ মাস। সে রংপুর পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। সিদ্দিক মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ছিল সে।

তিনি আরও বলেন, আমার ভাই অত্যন্ত মেধাবী, শান্ত ভদ্র একটা ছেলে। ১৮ জুলাই সে কলেজের উদ্দেশ্যে বের হলে জানতে পারে পরীক্ষা স্থগিত। তখন বন্ধুদের সঙ্গে মিছিলের মাঝে জড়িয়ে যায় এবং পুলিশের টিয়ারশেলে বন্ধুদের থেকে আলাদা হয়ে যায়।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৯:৩৩:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪
৫২৫ বার পড়া হয়েছে

রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ১৬ বছরের শিক্ষার্থী কারাগারে

আপডেট সময় ০৯:৩৩:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪

বন্ধুদের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মিছিলে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন রংপুর পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের ছাত্র আলফি শাহরিয়ার মাহিম (১৬)। তাকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ হত্যা মামলার আসামি হিসেবে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

আলফি শাহরিয়ার মাহিম এখন রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছে। পুলিশের দাবি, ওই হত্যা মামলায় জড়িত ছিল তাই গ্রেফতার করা হয়েছে।

আলফি শাহরিয়ার মাহিমের পরিবারের দাবি, গত ১৬ জুলাই বৃহস্পতিবার কোটা সংস্কার আন্দোলনের মিছিল রংপুর জিলা স্কুলের গেট থেকে বের হয়। ওই দিন মাহিম তার স্কুলে গিয়েছিল স্কুল ড্রেস পড়েই সে বন্ধুদের সঙ্গে ওই মিছিলে মিশে যায়। পড়ে তার কোনো খোঁজ পাচ্ছিলেন না পরিবারের লোকজন, অবশেষে হাসপাতাল, থানা পুলিশ সব জায়গায় গিয়ে তার কোনো খোঁজ মেলেনি।

পুলিশ গত ১৮ জুলাই তাজহাট থানার সহিংস ঘটনার সময় আলফি শাহরিয়ার মাহিমকে মডার্ন মোড় থেকে গ্রেফতার করে তাজহাট থানার ভেতর পেছনে হাত বেঁধে মেঝেতে বসিয়ে রাখে। যখন সেখানে হামলাকারীরা ব্যাপক সহিংসতায় থানায় হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে তখন পুলিশসহ তাকে পুলিশের গাড়িতে রংপুর কোতোয়ালি মেট্রোপলিটন থানায় নেওয়া হয়।

আলফি শাহরিয়ার মাহিমের বড় বোন সানজিনা আকতার স্নেহার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানা গেছে- গভীর রাতে একটি ফোন কলে পরিবারের কাছে খবর আসে ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে জানানো হয়- ‘আপনার ছেলে আমাদের হেফাজতে আছে জানাজানি করিয়েন না তাতে ছেলের ক্ষতি হবে, তাকে আগামীকাল সকালে ছেড়ে দেওয়া হবে চিন্তার কিছু নেই।’ কিন্তু পরের দিন পুলিশের কাছে ১৯ জুলাই সকালে আমরা খোঁজ নিলে তারা অস্বীকার করে বলে তাদের কাছে এই নামে কেউ নেই। এরপর আনুমানিক বিকাল সাড়ে ৪টায় কোর্ট থেকে কল আসে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আমরা কোর্ট থেকে নথিপত্র নিয়ে জানলাম তাকে আবু সাইদ ভাইয়ের হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সেদিন থেকে বারবার কারাগারের দরজা থেকে ফিরে এসেছি, একটাবার দেখা তো দূর তার কণ্ঠও শুনতে দেয়নি কেউ। মেট্রো কোর্ট তার মামলা কিছুতেই শিশু কোর্টে দিতে চায়নি; অনেক চেষ্টা করে গত ৩০ জুলাই শিশু কোর্টে নেওয়া হলে ডেট দেয় আগামী ৪ আগস্ট। আমার ছোট ভাই মো. আলফি শাহরিয়ার মাহিমকে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ; তার বয়স ১৬ বছর ১০ মাস। সে রংপুর পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। সিদ্দিক মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ছিল সে।

তিনি আরও বলেন, আমার ভাই অত্যন্ত মেধাবী, শান্ত ভদ্র একটা ছেলে। ১৮ জুলাই সে কলেজের উদ্দেশ্যে বের হলে জানতে পারে পরীক্ষা স্থগিত। তখন বন্ধুদের সঙ্গে মিছিলের মাঝে জড়িয়ে যায় এবং পুলিশের টিয়ারশেলে বন্ধুদের থেকে আলাদা হয়ে যায়।