আ. লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিষ্কার করছে কারা?
রাজধানীর গুলিস্তানে অবস্থিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় বর্তমানে একটি পরিত্যক্ত ভবনে পরিণত হয়েছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-এর সময় ভবনটি ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়। এরপর প্রায় এক বছর ধরে ভবনটি ভাসমান মানুষের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছিল।
ঘটনার প্রায় এক বছর পর ভবনটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ শুরু হয়েছে। তবে এই কাজ কারা পরিচালনা করছে, তা এখনও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবনের সামনে টাঙানো রয়েছে ‘আন্তর্জাতিক ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট’ নামের একটি ব্যানার। ভবনের ভেতরে একদল শ্রমিক নিচতলায় জমে থাকা নোংরা পানি পরিষ্কার করছেন, কেউ কেউ ভবনের বিভিন্ন তলায় কাজ করছেন। বৃহস্পতিবারও একই চিত্র দেখা গেছে।
ভবনের অভ্যন্তর ঘুরে দেখা যায়, দরজা-জানালা, গ্রিল, সুইচবোর্ড, বৈদ্যুতিক তার, লিফট এমনকি মেঝের টাইলসও খুলে নিয়ে গেছে কেউ না কেউ। এখন শুধু দেয়ালগুলো অবশিষ্ট রয়েছে।
পরিচ্ছন্নতার কাজে নিয়োজিত ‘নসু’ নামের এক ব্যক্তি জানান, তিনি আগে হাইকোর্ট বা স্টেডিয়ামের আশেপাশে থাকতেন, এখন প্রায় ১১ মাস ধরে এই ভবনেই বাস করছেন। তার ভাষায়, “আগে এখানে ঢুকলেই লাঠি দিয়ে তাড়িয়ে দিত, এখন আমরা থাকি, কাজও করি।”
তিনি আরও জানান, এখন ভবন পরিষ্কারের কাজটিও করছেন তারা নিজেরাই। “আমার ছেলেও কাজ করছে। আমরা ১২ জন শ্রমিক এখানে দৈনিক মজুরিতে কাজ করছি। বুধবার থেকে শুরু হয়েছে কাজ। ছাত্ররা কাজ করাচ্ছে।”
পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরেক ব্যক্তি চাঁন মিয়া বলেন, “এখন ভবনে কিছুই অবশিষ্ট নেই। এমনকি লিফটও ট্রাকে করে নিয়ে গেছে। ধীরে ধীরে সব খুলে নিয়ে গেছে লোকজন।”
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২৩ জুন শেখ হাসিনা এই ১০ তলা ভবনটি উদ্বোধন করেন। প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আওয়ামী লীগের এই কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছিল দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের প্রধান কেন্দ্র। এখন সেটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।