ঢাকা ০৪:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় অনাহারে একদিনেই ১৫ জনের মৃত্যু, শিশুদের নিয়েই অধিকাংশ প্রাণহানি

চেকপোস্ট ডেস্ক::

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় একদিনেই অনাহারে মারা গেছেন অন্তত ১৫ জন, যাদের মধ্যে রয়েছে মাত্র ছয় সপ্তাহ বয়সি এক নবজাতক। তীব্র খাদ্য সংকটে বিপর্যস্ত গাজায় প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। খবর আল জাজিরা।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে চলমান খাদ্য ঘাটতির কারণে গাজার পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। মৃত নবজাতকটির নাম ইউসুফ আবু জাহির। চাচা আদহাম আল-সাফাদি বলেন, “বাজারে কোথাও দুধ পাওয়া যাচ্ছে না। কোথাও পাওয়া গেলেও একটি ছোট টিনের কৌটার দাম ১০০ ডলার পর্যন্ত।”

মঙ্গলবার অনাহারে মৃত অন্যদের মধ্যেও ছিল আরও তিন শিশু। এদের একজন, ১৩ বছর বয়সি আব্দুলহামিদ আল-ঘালবান, যিনি গাজার খান ইউনিস শহরের একটি হাসপাতালে মারা যান।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের পর এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১০১ জন অনাহার ও অপুষ্টিতে প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮০ জনই শিশু। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মৃত্যুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।

২০২৪ সালের মার্চে ইসরায়েল গাজায় সকল পণ্য প্রবেশ বন্ধ করে দিলে চূড়ান্ত খাদ্য সংকট শুরু হয়। মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত সংস্থা গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) সীমিত আকারে ত্রাণ বিতরণের অনুমতি পেলেও জাতিসংঘ এতে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি।

কিন্তু এই সহায়তা বিতরণের স্থানগুলোতে হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের তথ্য মতে, এই প্রাণহানির বড় অংশ ঘটেছে মে মাসের পর থেকে।

ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, “জিএইচএফ-এর ত্রাণ বিতরণ এক প্রকার ‘নৃশংস মৃত্যুফাঁদ’। সহায়তার অপেক্ষায় থাকা সাধারণ মানুষজনের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হচ্ছে, যেন তাদের হত্যা বৈধ করা হয়েছে।”

এদিকে, ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাস ত্রাণ ছিনিয়ে নিচ্ছে। তবে এর পক্ষে তারা কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। জিএইচএফও জাতিসংঘের প্রতিবেদনকে “অতিরঞ্জিত ও ভুল” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

গাজায় মানবিক বিপর্যয় চরমে পৌঁছেছে—যেখানে ক্ষুধাই এখন প্রধান হত্যাকারী।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১০:৪৭:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
৫২৮ বার পড়া হয়েছে

গাজায় অনাহারে একদিনেই ১৫ জনের মৃত্যু, শিশুদের নিয়েই অধিকাংশ প্রাণহানি

আপডেট সময় ১০:৪৭:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় একদিনেই অনাহারে মারা গেছেন অন্তত ১৫ জন, যাদের মধ্যে রয়েছে মাত্র ছয় সপ্তাহ বয়সি এক নবজাতক। তীব্র খাদ্য সংকটে বিপর্যস্ত গাজায় প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। খবর আল জাজিরা।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে চলমান খাদ্য ঘাটতির কারণে গাজার পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। মৃত নবজাতকটির নাম ইউসুফ আবু জাহির। চাচা আদহাম আল-সাফাদি বলেন, “বাজারে কোথাও দুধ পাওয়া যাচ্ছে না। কোথাও পাওয়া গেলেও একটি ছোট টিনের কৌটার দাম ১০০ ডলার পর্যন্ত।”

মঙ্গলবার অনাহারে মৃত অন্যদের মধ্যেও ছিল আরও তিন শিশু। এদের একজন, ১৩ বছর বয়সি আব্দুলহামিদ আল-ঘালবান, যিনি গাজার খান ইউনিস শহরের একটি হাসপাতালে মারা যান।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের পর এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১০১ জন অনাহার ও অপুষ্টিতে প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮০ জনই শিশু। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মৃত্যুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।

২০২৪ সালের মার্চে ইসরায়েল গাজায় সকল পণ্য প্রবেশ বন্ধ করে দিলে চূড়ান্ত খাদ্য সংকট শুরু হয়। মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত সংস্থা গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) সীমিত আকারে ত্রাণ বিতরণের অনুমতি পেলেও জাতিসংঘ এতে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি।

কিন্তু এই সহায়তা বিতরণের স্থানগুলোতে হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের তথ্য মতে, এই প্রাণহানির বড় অংশ ঘটেছে মে মাসের পর থেকে।

ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, “জিএইচএফ-এর ত্রাণ বিতরণ এক প্রকার ‘নৃশংস মৃত্যুফাঁদ’। সহায়তার অপেক্ষায় থাকা সাধারণ মানুষজনের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হচ্ছে, যেন তাদের হত্যা বৈধ করা হয়েছে।”

এদিকে, ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাস ত্রাণ ছিনিয়ে নিচ্ছে। তবে এর পক্ষে তারা কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। জিএইচএফও জাতিসংঘের প্রতিবেদনকে “অতিরঞ্জিত ও ভুল” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

গাজায় মানবিক বিপর্যয় চরমে পৌঁছেছে—যেখানে ক্ষুধাই এখন প্রধান হত্যাকারী।