কুষ্টিয়ায় জামায়াতের সমাবেশে উত্তপ্ত বক্তব্য, দায়ীদের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
গোপালগঞ্জকে ভাগ করে ৬৩ জেলা করার প্রস্তাব আমির হামজার
আলোচিত ইসলামী বক্তা মুফতি আমির হামজা বলেছেন, “গোপালগঞ্জ শুধু নাম পরিবর্তন করলেই চলবে না, বরং জেলার অস্তিত্বই বিলুপ্ত করে আশপাশের চারটি জেলায় ভাগ করে দেওয়া উচিত।” বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) কুষ্টিয়ায় জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “গোপালগঞ্জ মানচিত্রে না থাকাই ভালো। এটা একটা অভিশপ্ত জেলা। অভিশপ্ত জেলাকে বাংলার মানচিত্র থেকে মুছে দিয়ে বাংলাদেশকে ৬৩ জেলায় রূপান্তর করা হোক।” আমির হামজা আরও দাবি করেন, “এই জেলার তিনটি আসনকে নড়াইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও বরিশালের মধ্যে ভাগ করে দিলেই সমস্যা মিটে যায়।”
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর পদযাত্রা ও সমাবেশ ঘিরে সংঘটিত সহিংসতার প্রতিবাদে এই কর্মসূচির আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় নেতারা। উপস্থিত ছিলেন জেলা নায়েবে আমির মো. আব্দুল গফুর, জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক সুজা উদ্দিনসহ অন্যান্য নেতা-কর্মীরা।
মুফতি আমির হামজা বলেন, “জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলা মানে দেশের ১৮ কোটি মানুষের ওপর হামলা। আমরা ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছি। এরপরও ব্যবস্থা না নিলে বুঝে নেব, গোপালগঞ্জ জেলার দায়িত্বে যারা আছে, তারা এ ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।”
জেলা জামায়াত নেতারাও একইসঙ্গে গোপালগঞ্জ জেলার নাম পরিবর্তনের জন্য একটি অধ্যাদেশ জারির দাবি তোলেন। তারা বলেন, “গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) এই ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না।”
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) রাতে গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ৭৫ জনকে নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদী সদর থানার পরিদর্শক আহম্মেদ আলী।
সদর থানার ওসি মির মো. সাজেদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, এনসিপির কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, হামলা এবং সংঘর্ষের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটানো হয়।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (১৬ জুলাই) সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হন। নিহতরা হলেন-রমজান কাজী (১৯), পিতা কামরুল কাজী, হরিণাহাটি, কোটালীপাড়া, সোহেল রানা (৩৫), শানাপাড়া, দীপ্ত সাহা (৩০), পিতা সন্তোষ সাহা, উদয়ন রোড, ইমন তালুকদার (২৪), ভেড়ার বাজার, রমজান মুন্সী (৩২)।
সহিংসতা ও পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে প্রশাসন সন্ধ্যায় পুরো গোপালগঞ্জ শহরে কারফিউ জারি করে। এখনও সেখানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।