ঢাকা ০৯:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কাজীরহাট কলেজে বিতর্কিত শিক্ষক পুনর্বহাল, শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি::

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কাজীরহাট কলেজে একাধিক ছাত্রীকে বিয়ে ও অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমানকে পুনরায় নিয়মিত শিক্ষক হিসেবে ক্লাস নেওয়ার অনুমতি দেওয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এতে সোমবার শিক্ষার্থীরা তার ক্লাস বর্জন করেছে বলে জানা গেছে।

অভিযোগ রয়েছে, ২০১৫ সালে যোগদানের পর ওই শিক্ষক কলেজের ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং দুজন ছাত্রীকে বিয়ে করেন, যাদের এক জনকে পরবর্তীতে তালাক দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে এবং পরে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়।

শিক্ষকরা জানান, ওই মামলার নিষ্পত্তি ছাড়াই চলতি বছরের ১৫ মে কলেজের একটি অস্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তে তাকে পুনরায় ক্লাস নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে কলেজের শিক্ষক সমাজ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।

একাদশ শ্রেণির একাধিক শিক্ষার্থী জানান, তারা ওই শিক্ষককে ক্লাসে চান না এবং তার পূর্বের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবগত রয়েছেন। একজন শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা তার ক্লাসে যাই না। আমরা চাই না এমন কোনো শিক্ষক আমাদের শিক্ষা দিক, যার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ রয়েছে।”

কলেজের একজন সিনিয়র শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “উপরে চাপের কারণে মুচলেকা নিয়ে তাকে ক্লাসে ফেরানো হয়েছে। তবে এ সিদ্ধান্তে আমরা কেউ সন্তুষ্ট নই।”

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না, অধ্যক্ষ স্যারের সঙ্গে কথা বলুন।”

এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ এস এম সহিদুল আলম বলেন, “শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান ২০১৫ সালে যোগ দেন। কিছু অভিযোগের কারণে তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে কোনো লিখিত অভিযোগ না থাকায় তাকে ক্লাসে ফেরানো হয়েছে।”
তিনি উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এসব ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক কথা।”

স্থানীয়ভাবে জানা যায়, কলেজে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে এবং শিক্ষক সমাজের অনেকে মনে করছেন, এ সিদ্ধান্ত কলেজের ভাবমূর্তি ও শিক্ষার পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৯:৪৫:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫
৫৭৭ বার পড়া হয়েছে

কাজীরহাট কলেজে বিতর্কিত শিক্ষক পুনর্বহাল, শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন

আপডেট সময় ০৯:৪৫:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কাজীরহাট কলেজে একাধিক ছাত্রীকে বিয়ে ও অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমানকে পুনরায় নিয়মিত শিক্ষক হিসেবে ক্লাস নেওয়ার অনুমতি দেওয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এতে সোমবার শিক্ষার্থীরা তার ক্লাস বর্জন করেছে বলে জানা গেছে।

অভিযোগ রয়েছে, ২০১৫ সালে যোগদানের পর ওই শিক্ষক কলেজের ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং দুজন ছাত্রীকে বিয়ে করেন, যাদের এক জনকে পরবর্তীতে তালাক দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে এবং পরে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়।

শিক্ষকরা জানান, ওই মামলার নিষ্পত্তি ছাড়াই চলতি বছরের ১৫ মে কলেজের একটি অস্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তে তাকে পুনরায় ক্লাস নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে কলেজের শিক্ষক সমাজ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।

একাদশ শ্রেণির একাধিক শিক্ষার্থী জানান, তারা ওই শিক্ষককে ক্লাসে চান না এবং তার পূর্বের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবগত রয়েছেন। একজন শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা তার ক্লাসে যাই না। আমরা চাই না এমন কোনো শিক্ষক আমাদের শিক্ষা দিক, যার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ রয়েছে।”

কলেজের একজন সিনিয়র শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “উপরে চাপের কারণে মুচলেকা নিয়ে তাকে ক্লাসে ফেরানো হয়েছে। তবে এ সিদ্ধান্তে আমরা কেউ সন্তুষ্ট নই।”

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না, অধ্যক্ষ স্যারের সঙ্গে কথা বলুন।”

এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ এস এম সহিদুল আলম বলেন, “শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান ২০১৫ সালে যোগ দেন। কিছু অভিযোগের কারণে তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে কোনো লিখিত অভিযোগ না থাকায় তাকে ক্লাসে ফেরানো হয়েছে।”
তিনি উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এসব ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক কথা।”

স্থানীয়ভাবে জানা যায়, কলেজে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে এবং শিক্ষক সমাজের অনেকে মনে করছেন, এ সিদ্ধান্ত কলেজের ভাবমূর্তি ও শিক্ষার পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।