জয়পুরহাটে নদীপাড়ের ফাটল দিয়ে পানি, ‘অলৌকিক’ ভেবে পান করছেন অনেকে
জয়পুরহাট সদর উপজেলার কুঠিবাড়ি এলাকায় ছোট যমুনা নদীর পাড়ে একটি ফাটল দিয়ে বের হওয়া পানি ঘিরে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই এ ঘটনাকে ‘অলৌকিক’ হিসেবে মনে করছেন এবং রোগ নিরাময়ের আশায় সেই পানি সংগ্রহ করে পান করছেন। তবে চিকিৎসকরা এই পানি পান করা থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন, কারণ এটি হতে পারে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের উৎস।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, পুরোনো সেতুর দক্ষিণ পাশে একটি পিলারের নিচ থেকে ক্ষীণ গতিতে পানি নির্গত হচ্ছে। সেখানে বসানো হয়েছে আড়াই হাত লম্বা একটি ডোঙা, যার মাধ্যমে পানি নদীতে পড়ছে। স্থানীয় নারী, শিশু ও কিশোরদের অনেকে সেখানে দাঁড়িয়ে বোতলে পানি সংগ্রহ করছেন। পানি কখনো স্বচ্ছ, আবার কখনো বালু ও ময়লা মিশ্রিত অবস্থায় পাওয়া যাচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে এই পানি প্রবাহ চলছে। শুরুতে কেউ গুরুত্ব না দিলেও পরে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, এই পানি পান করে কেউ কেউ রোগ থেকে সেরে উঠেছেন। এমনই এক গৃহবধূ লিপি বেগম জানান, তার মেয়ে অসুস্থ, তাই তিনি ‘অলৌকিক’ পানি সংগ্রহ করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন।
তবে স্থানীয় বাসিন্দা মাহবুব হোসেন বিষয়টিকে বাস্তবভাবে ব্যাখ্যা করে বলেন, “এটা অলৌকিক নয়। সম্ভবত নদীর পাড়ের বালুর স্তর দিয়ে চাপযুক্ত পানি নির্গত হচ্ছে। তবে মানুষ ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করছে।”
এ বিষয়ে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সরদার রাশেদ মোবারক বলেন, “এ ধরনের পানি অপরিশুদ্ধ। এটি পান করলে ডায়রিয়া, টাইফয়েড, কলেরা ও জন্ডিসের মতো পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হবে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো এবং পানির নমুনা পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া জরুরি, যাতে কোনো প্রকার স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়ানো যায়।