আজ আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস:
শ্রমিক অধিকার আদায়ের ইতিহাসের গৌরবময় দিন
আজ ১ মে, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস বা মে দিবস। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও দিনটি সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালিত হচ্ছে। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের স্মরণে প্রতি বছর এদিনটি পালিত হয়।
১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের ‘হে মার্কেট’ এলাকায় ৮ ঘণ্টা কর্মদিবসের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনা শ্রমিক ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে আছে। পুলিশের গুলিতে ১১ জন শ্রমিক নিহত হন এবং পরবর্তীতে প্রহসনমূলক বিচারে ৬ জন শ্রমিক নেতাকে ফাঁসি দেওয়া হয়। তাঁদের একজন, আগস্ট স্পীজ, ফাঁসির আগে বলেছিলেন, “আজ আমাদের এই নি:শব্দতা, তোমাদের আওয়াজ অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী হবে।”
এই আন্দোলনের পথ ধরেই শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টা কর্মদিবসের দাবি স্বীকৃতি পায় এবং ১৮৯০ সালে ইন্টারন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট কংগ্রেস ১ মে-কে শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
বিশ্বব্যাপী সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব ও শ্রমিক আন্দোলনের জোরালো প্রভাবের ফলে মে দিবসের তাৎপর্য আরও গভীর হয়। জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) গঠনের মাধ্যমে শ্রমিক অধিকার সংরক্ষায় একটি আন্তর্জাতিক কাঠামো গড়ে ওঠে। বাংলাদেশও আইএলও-এর একটি স্বাক্ষরকারী দেশ।
বাংলাদেশে প্রথম মে দিবস উদ্যাপিত হয় ১৯২০ সালে ঢাকা শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে। এরপর থেকে প্রতি বছরই দিবসটি রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হয়ে আসছে।
আজকের দিনটি শুধু ছুটি নয়, বরং শ্রমজীবী মানুষের আত্মত্যাগ ও অধিকার আদায়ের সংগ্রামকে স্মরণ করার দিন।