টিউবওয়েল থেকে বের হচ্ছে গ্যাস, চাঞ্চল্য রাজশাহীর বাগমারায়
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার সোনাডাঙ্গা ইউনিয়নে একটি পুরনো টিউবওয়েল থেকে গ্যাস নির্গত হওয়ার ঘটনা এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। সোনাডাঙ্গা গ্রামের আব্দুস সালামের বাড়িতে এই বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর উৎসুক মানুষ ভিড় করছেন ঘটনাস্থলে, নিজ চোখে এই দৃশ্য দেখার জন্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২০-২৫ বছর আগে আব্দুস সালাম তার বাড়িতে খাবার পানির জন্য একটি টিউবওয়েল স্থাপন করেন। তবে প্রায় তিন-চার মাস আগে সেটিতে পানি ওঠা বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি পরিবারটি লক্ষ্য করে যে টিউবওয়েলের মুখ দিয়ে পানি নয়, বরং একটি গ্যাসজাতীয় পদার্থ বের হচ্ছে। পরীক্ষামূলকভাবে একটি ম্যাচ জ্বালিয়ে দিলে দেখা যায় গ্যাসটি সহজেই দাউ দাউ করে জ্বলছে।
এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে আব্দুস সালামের পরিবার। পরে বিষয়টি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক অধ্যক্ষ আজাহারুল হককে জানানো হয়। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল ইসলামকে অবহিত করেন।
ইউএনও মাহবুবুল ইসলাম সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। সেখানে উপস্থিত লোকজনের সামনে তিনি টিউবওয়েলের মুখে আগুন লাগিয়ে নিশ্চিত হন যে গ্যাসটি দাহ্য। ঘটনাস্থলে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুর রাজ্জাক এবং পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
স্থানীয় চেয়ারম্যান আজাহারুল হক বলেন, “আমাদের এলাকায় এমন ঘটনা এই প্রথম। তাই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।”
ঘটনার বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী খলিলুর রহমান জানান, “মাটির গভীরে পচন ধরা জৈবপদার্থ থেকে মিথেন জাতীয় গ্যাস উৎপন্ন হয়ে থাকতে পারে। তবে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশের কিছু জায়গায় এমন ঘটনা ঘটেছে যেখানে টিউবওয়েলের মুখ দিয়ে গ্যাস বের হয়েছে। কিছুক্ষেত্রে এটি কয়েকদিনের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায়। তবে যেহেতু এখানে গ্যাসটি আগুন ধরলে জ্বলে উঠছে, তাই স্থানীয়দের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। গ্যাস বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন এটি প্রাকৃতিক গ্যাস কিনা।”
বর্তমানে আব্দুস সালামের পরিবার পানি সংগ্রহের জন্য অন্য উৎসের ওপর নির্ভরশীল। আব্দুস সালাম, যিনি চট্টগ্রামে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন, গ্যাসের খবর পেয়ে নিজ বাড়িতে ফিরে এসেছেন।
স্থানীয়দের মতে, এমন একটি ঘটনায় সঠিক তদন্ত এবং বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা জরুরি, যাতে ভবিষ্যতে কোনও দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।