ঢাকা ০৮:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইসলামপুর থানায় বেড়েছে দালাল, ২ দালালকে থানায় প্রবেশে ওসির হুঁশিয়ারি

জাকিরুল ইসলাম বাবু, জামালপুর::

জামালপুরের ইসলামপুর থানায় দালালচক্রের তৎপরতা বাড়ছে। সেবাপ্রার্থীদের অভিযোগ, থানার আশপাশে দালালরা ঘুরাফেরা করে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। তাদের প্রলোভনে পড়ে কেউ কেউ অর্থ হারাচ্ছেন, আবার অনেকেই কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ অবস্থায় দুই দালালকে থানায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন ওসি মো. সাইফুল্লাহ সাইফ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, থানায় প্রবেশ করা মাত্রই দালালরা সেবাপ্রার্থীদের কাছ থেকে জেনে নেন তারা সাধারণ ডায়েরি (জিডি), অভিযোগ না মামলা করতে চান। এরপর নানা কৌশলে থানার বাইরের কম্পিউটার দোকানে নিয়ে গিয়ে অভিযোগ বা মামলার খরচের নামে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অঙ্কের টাকা।

এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, দালালদের মাধ্যমেই থানায় নিয়মিত সালিশ বসছে। এসব সালিশে বাদী-বিবাদী উভয়পক্ষকে ডেকে চুক্তির ভিত্তিতে সমস্যা মীমাংসা করা হয়। সেখানে দেখা যায় অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে জায়গা-জমির বিরোধ মেটানো হচ্ছে। এমনকি অনেক পুলিশ সদস্যের নিজস্ব দালাল রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী জানান, “পুলিশকে সরাসরি কিছু বললে তারা সহযোগিতা করতে চান না, বরং দালালের মাধ্যমেই কাজ সহজ হয়।” দালালরাই নাকি অভিযোগ সংগ্রহ করে পুলিশের নির্দিষ্ট সদস্যদের কাছে নিয়ে যান এবং টাকা নিয়ে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দেন।

এ বিষয়ে ইসলামপুর থানার ওসি মো. সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন, “আমি এখানে নতুন যোগ দিয়েছি। দালালদের চিহ্নিত করতে কাজ চলছে। ইতোমধ্যে কামাল হোসেন ও মহাদেব সাহা নামে দুইজনকে থানায় না ঢোকার সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। দালালদের সঙ্গে পুলিশ সদস্য কেউ জড়িত থাকলে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তিনি আরও বলেন, “স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিচার-সালিশে অংশগ্রহণে আগ্রহী না হওয়ায় কিছু পারিবারিক বিরোধ থানাতেই মীমাংসা করতে হয়। তবে দালালদের দৌরাত্ম্য রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

ইসলামপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) অভিজিত দাস জানান, “দালালদের বিষয়ে থানায় কড়া নির্দেশনা রয়েছে। কোনো অবস্থায় তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। পুলিশ সেবাপ্রার্থীদের সঠিক সেবা দিতেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১০:৪৬:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
৫৪২ বার পড়া হয়েছে

ইসলামপুর থানায় বেড়েছে দালাল, ২ দালালকে থানায় প্রবেশে ওসির হুঁশিয়ারি

আপডেট সময় ১০:৪৬:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

জামালপুরের ইসলামপুর থানায় দালালচক্রের তৎপরতা বাড়ছে। সেবাপ্রার্থীদের অভিযোগ, থানার আশপাশে দালালরা ঘুরাফেরা করে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। তাদের প্রলোভনে পড়ে কেউ কেউ অর্থ হারাচ্ছেন, আবার অনেকেই কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ অবস্থায় দুই দালালকে থানায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন ওসি মো. সাইফুল্লাহ সাইফ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, থানায় প্রবেশ করা মাত্রই দালালরা সেবাপ্রার্থীদের কাছ থেকে জেনে নেন তারা সাধারণ ডায়েরি (জিডি), অভিযোগ না মামলা করতে চান। এরপর নানা কৌশলে থানার বাইরের কম্পিউটার দোকানে নিয়ে গিয়ে অভিযোগ বা মামলার খরচের নামে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অঙ্কের টাকা।

এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, দালালদের মাধ্যমেই থানায় নিয়মিত সালিশ বসছে। এসব সালিশে বাদী-বিবাদী উভয়পক্ষকে ডেকে চুক্তির ভিত্তিতে সমস্যা মীমাংসা করা হয়। সেখানে দেখা যায় অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে জায়গা-জমির বিরোধ মেটানো হচ্ছে। এমনকি অনেক পুলিশ সদস্যের নিজস্ব দালাল রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী জানান, “পুলিশকে সরাসরি কিছু বললে তারা সহযোগিতা করতে চান না, বরং দালালের মাধ্যমেই কাজ সহজ হয়।” দালালরাই নাকি অভিযোগ সংগ্রহ করে পুলিশের নির্দিষ্ট সদস্যদের কাছে নিয়ে যান এবং টাকা নিয়ে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দেন।

এ বিষয়ে ইসলামপুর থানার ওসি মো. সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন, “আমি এখানে নতুন যোগ দিয়েছি। দালালদের চিহ্নিত করতে কাজ চলছে। ইতোমধ্যে কামাল হোসেন ও মহাদেব সাহা নামে দুইজনকে থানায় না ঢোকার সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। দালালদের সঙ্গে পুলিশ সদস্য কেউ জড়িত থাকলে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তিনি আরও বলেন, “স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিচার-সালিশে অংশগ্রহণে আগ্রহী না হওয়ায় কিছু পারিবারিক বিরোধ থানাতেই মীমাংসা করতে হয়। তবে দালালদের দৌরাত্ম্য রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

ইসলামপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) অভিজিত দাস জানান, “দালালদের বিষয়ে থানায় কড়া নির্দেশনা রয়েছে। কোনো অবস্থায় তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। পুলিশ সেবাপ্রার্থীদের সঠিক সেবা দিতেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”