ঢাকা ০৭:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘মার্চ ফর গাজা’ ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে: ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত

চেকপোস্ট ডেস্ক::

ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘মার্চ ফর গাজা’ সমাবেশ শুধু একটি প্রতিবাদ কর্মসূচি নয়, এটি ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে— এমনটাই মনে করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ ওয়াই রামাদান। শনিবার (১২ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে তিনি এই সমাবেশকে “প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে প্রতিধ্বনিত হওয়ার মতো ঘটনা” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, “ঢাকা তার অতুলনীয় আন্তরিকতা দিয়ে বিশ্বকে অবাক করেছে। ১২ এপ্রিল বিশ্ব যা প্রত্যক্ষ করেছে, তা ইতিহাসের পাতায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতির অন্যতম শক্তিশালী বার্তা হয়ে থাকবে।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের জনগণের প্রাণশক্তি এক অকাট্য সত্যকে তুলে ধরেছে— এই জাতি কেবল কথায় নয়, নীতিগতভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। পুরুষ, নারী, তরুণ, বৃদ্ধ— সবাই এক কণ্ঠে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার হয়েছে।”

রাষ্ট্রদূত ইউসুফ রামাদান বলেন, “এই জাতি একটি অপরিবর্তনীয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে— বাংলাদেশ কখনোই ইতিহাসের ভুল দিকে দাঁড়াবে না। তারা যে ন্যায়ের পক্ষে, তা প্রমাণ করেছে। ফিলিস্তিনের সংগ্রামে বাংলাদেশিদের এমন নিঃস্বার্থ ও অটল অবস্থান বিরল দৃষ্টান্ত।”

তিনি ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘মার্চ ফর গাজা’ সমাবেশের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, “আমরা ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে লাল-সবুজের সমুদ্র দেখেছি। ফিলিস্তিনের পতাকার পাশে উড়েছে বাংলাদেশের পতাকা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পটভূমিতে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার কণ্ঠস্বর একসঙ্গে উচ্চারণ করেছে— ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করো’, ‘ন্যায়বিচার চাই’।”

রাষ্ট্রদূতের ভাষায়, “প্রতিটি ছাত্র, শিল্পী, ইমাম, মা-বোন যারা এই আন্দোলনে কণ্ঠ মিলিয়েছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। গাজার শরণার্থী শিবির থেকে শুরু করে পশ্চিম তীরের জলপাই গাছ পর্যন্ত— বাংলাদেশের এই সংহতি গভীরভাবে অনুভব করছে ফিলিস্তিনিরা।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের এমন সাহসী ও সম্মানজনক অবস্থান কখনও ভুলব না। আমরা বাংলাদেশের জন্য প্রার্থনা করি— যেন এই দেশ নিরাপদ, স্থিতিশীল এবং অব্যাহত অগ্রগতির পথে এগিয়ে যায়।”

বিবৃতির শেষাংশে রাষ্ট্রদূত বলেন, “আপনারা শুধু সমর্থক নন, বরং ফিলিস্তিনের আশা, মর্যাদা ও সংগ্রামের অংশ। ফিলিস্তিন-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব দীর্ঘজীবী হোক। আমাদের যৌথ সংগ্রাম দীর্ঘজীবী হোক।”

প্রসঙ্গত, ১২ এপ্রিল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’-এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি। গণহত্যার প্রতিবাদ ও সংহতি প্রকাশে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে লাখো মানুষ দল-মত নির্বিশেষে অংশগ্রহণ করেন।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১১:১৬:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫
৫২৩ বার পড়া হয়েছে

‘মার্চ ফর গাজা’ ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে: ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত

আপডেট সময় ১১:১৬:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘মার্চ ফর গাজা’ সমাবেশ শুধু একটি প্রতিবাদ কর্মসূচি নয়, এটি ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে— এমনটাই মনে করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ ওয়াই রামাদান। শনিবার (১২ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে তিনি এই সমাবেশকে “প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে প্রতিধ্বনিত হওয়ার মতো ঘটনা” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, “ঢাকা তার অতুলনীয় আন্তরিকতা দিয়ে বিশ্বকে অবাক করেছে। ১২ এপ্রিল বিশ্ব যা প্রত্যক্ষ করেছে, তা ইতিহাসের পাতায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতির অন্যতম শক্তিশালী বার্তা হয়ে থাকবে।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের জনগণের প্রাণশক্তি এক অকাট্য সত্যকে তুলে ধরেছে— এই জাতি কেবল কথায় নয়, নীতিগতভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। পুরুষ, নারী, তরুণ, বৃদ্ধ— সবাই এক কণ্ঠে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার হয়েছে।”

রাষ্ট্রদূত ইউসুফ রামাদান বলেন, “এই জাতি একটি অপরিবর্তনীয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে— বাংলাদেশ কখনোই ইতিহাসের ভুল দিকে দাঁড়াবে না। তারা যে ন্যায়ের পক্ষে, তা প্রমাণ করেছে। ফিলিস্তিনের সংগ্রামে বাংলাদেশিদের এমন নিঃস্বার্থ ও অটল অবস্থান বিরল দৃষ্টান্ত।”

তিনি ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘মার্চ ফর গাজা’ সমাবেশের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, “আমরা ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে লাল-সবুজের সমুদ্র দেখেছি। ফিলিস্তিনের পতাকার পাশে উড়েছে বাংলাদেশের পতাকা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পটভূমিতে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার কণ্ঠস্বর একসঙ্গে উচ্চারণ করেছে— ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করো’, ‘ন্যায়বিচার চাই’।”

রাষ্ট্রদূতের ভাষায়, “প্রতিটি ছাত্র, শিল্পী, ইমাম, মা-বোন যারা এই আন্দোলনে কণ্ঠ মিলিয়েছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। গাজার শরণার্থী শিবির থেকে শুরু করে পশ্চিম তীরের জলপাই গাছ পর্যন্ত— বাংলাদেশের এই সংহতি গভীরভাবে অনুভব করছে ফিলিস্তিনিরা।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের এমন সাহসী ও সম্মানজনক অবস্থান কখনও ভুলব না। আমরা বাংলাদেশের জন্য প্রার্থনা করি— যেন এই দেশ নিরাপদ, স্থিতিশীল এবং অব্যাহত অগ্রগতির পথে এগিয়ে যায়।”

বিবৃতির শেষাংশে রাষ্ট্রদূত বলেন, “আপনারা শুধু সমর্থক নন, বরং ফিলিস্তিনের আশা, মর্যাদা ও সংগ্রামের অংশ। ফিলিস্তিন-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব দীর্ঘজীবী হোক। আমাদের যৌথ সংগ্রাম দীর্ঘজীবী হোক।”

প্রসঙ্গত, ১২ এপ্রিল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’-এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি। গণহত্যার প্রতিবাদ ও সংহতি প্রকাশে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে লাখো মানুষ দল-মত নির্বিশেষে অংশগ্রহণ করেন।