ঢাকা ০৮:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সচিব পদে পদোন্নতিতে ‘পক্ষপাতের’ অভিযোগ, প্রশাসনে অসন্তোষ

চেকপোস্ট প্রতিবেদক::

প্রশাসনে সচিব পদে পদোন্নতি নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে। সাম্প্রতিক কয়েকটি পদোন্নতিতে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কার ‘ঘনিষ্ঠ’ ও ‘বিশ্বস্ত’ কর্মকর্তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে—এমন অভিযোগ তুলেছেন পদবঞ্চিত কর্মকর্তারা। এ নিয়ে সচিবালয়সহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অসন্তোষ ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সর্বশেষ সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মফিদুর রহমানকে সচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে একই মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়েছে। এর আগে গত ২৪ মার্চ ১৫তম বিসিএসের আরও দুই কর্মকর্তার পদোন্নতির সিদ্ধান্ত হয়।

অভিযোগ রয়েছে, পদোন্নতি পাওয়া বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা অতীতে সরকারঘনিষ্ঠ বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন এবং পদোন্নতির পর একাধিকবার জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারতে অংশ নেন। এমনকি কারো কারো বিরুদ্ধে স্বৈরশাসনকালীন সময়েও বিশেষ সুবিধা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।

প্রশাসনে দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতির অপেক্ষায় থাকা কর্মকর্তারা বলছেন, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নয়; বরং রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও অতীত আনুগত্যের ওপর ভিত্তি করেই পদোন্নতির সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।

একজন কর্মকর্তার ভাষ্য, “ছয় মাস আগে থেকেই যোগ্য কর্মকর্তাদের একটি তালিকা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হলেও তা অগ্রাধিকার পাচ্ছে না। বরং বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকর্তাদের দ্রুত পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে। এতে প্রশাসনের ন্যায়বিচার ও নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।”

সূত্র বলছে, অতিরিক্ত সচিব ড. এ কে এম শাহাবুদ্দিনকেও সচিব পদে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে এবং যেকোনো সময় প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। তিনিসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অতীত সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে সুবিধাভোগের অভিযোগ রয়েছে বলে বঞ্চিত কর্মকর্তারা দাবি করছেন।

পদবঞ্চিত কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে অভিযোগপত্র আকারে একটি তালিকা তৈরি করে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে। সেখানে কিছু নির্দিষ্ট নাম উল্লেখ করে তাদের গতিবিধি ও কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে এই কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ডে নজরদারি দাবি করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির আওতায় ৭৬৪ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ১১৯ জন সচিব, ৫২৮ জন অতিরিক্ত সচিব, ৭২ জন যুগ্ম সচিব, ৪ জন উপসচিব এবং গ্রেড-১ পদে ৪১ জন কর্মকর্তা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৪:৩২:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
৫৩৫ বার পড়া হয়েছে

সচিব পদে পদোন্নতিতে ‘পক্ষপাতের’ অভিযোগ, প্রশাসনে অসন্তোষ

আপডেট সময় ০৪:৩২:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

প্রশাসনে সচিব পদে পদোন্নতি নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে। সাম্প্রতিক কয়েকটি পদোন্নতিতে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কার ‘ঘনিষ্ঠ’ ও ‘বিশ্বস্ত’ কর্মকর্তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে—এমন অভিযোগ তুলেছেন পদবঞ্চিত কর্মকর্তারা। এ নিয়ে সচিবালয়সহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অসন্তোষ ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সর্বশেষ সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মফিদুর রহমানকে সচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে একই মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়েছে। এর আগে গত ২৪ মার্চ ১৫তম বিসিএসের আরও দুই কর্মকর্তার পদোন্নতির সিদ্ধান্ত হয়।

অভিযোগ রয়েছে, পদোন্নতি পাওয়া বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা অতীতে সরকারঘনিষ্ঠ বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন এবং পদোন্নতির পর একাধিকবার জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারতে অংশ নেন। এমনকি কারো কারো বিরুদ্ধে স্বৈরশাসনকালীন সময়েও বিশেষ সুবিধা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।

প্রশাসনে দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতির অপেক্ষায় থাকা কর্মকর্তারা বলছেন, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নয়; বরং রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও অতীত আনুগত্যের ওপর ভিত্তি করেই পদোন্নতির সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।

একজন কর্মকর্তার ভাষ্য, “ছয় মাস আগে থেকেই যোগ্য কর্মকর্তাদের একটি তালিকা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হলেও তা অগ্রাধিকার পাচ্ছে না। বরং বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকর্তাদের দ্রুত পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে। এতে প্রশাসনের ন্যায়বিচার ও নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।”

সূত্র বলছে, অতিরিক্ত সচিব ড. এ কে এম শাহাবুদ্দিনকেও সচিব পদে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে এবং যেকোনো সময় প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। তিনিসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অতীত সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে সুবিধাভোগের অভিযোগ রয়েছে বলে বঞ্চিত কর্মকর্তারা দাবি করছেন।

পদবঞ্চিত কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে অভিযোগপত্র আকারে একটি তালিকা তৈরি করে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে। সেখানে কিছু নির্দিষ্ট নাম উল্লেখ করে তাদের গতিবিধি ও কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে এই কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ডে নজরদারি দাবি করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির আওতায় ৭৬৪ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ১১৯ জন সচিব, ৫২৮ জন অতিরিক্ত সচিব, ৭২ জন যুগ্ম সচিব, ৪ জন উপসচিব এবং গ্রেড-১ পদে ৪১ জন কর্মকর্তা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।