রাজধানীতে ওয়াসার পানিতে দুর্গন্ধ ও পোকা, বাড়ছে পেটের অসুখ ও চর্মরোগ
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার সরবরাহ করা পানিতে পোকা ও দুর্গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। কল ছাড়লেই বের হচ্ছে ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি। বাসিন্দারা এই পানি পান না করলেও বাধ্য হয়ে গোসল, রান্না ও অন্যান্য দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করছেন। এর ফলে পেটের অসুখ ও চর্মরোগসহ নানা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
গত এক সপ্তাহ ধরে কল্যাণপুর, মগবাজার ও মধুবাগে এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বাসা-বাড়ির পানির ট্যাংক পরিষ্কার করেও মিলছে না কোনো স্থায়ী সমাধান। এলাকাবাসীর দাবি, সমস্যা মূলত ওয়াসার সাপ্লাই লাইনে, সেখান থেকেই পানি ময়লা হয়ে বাসায় আসছে।
মধুবাগের এক বাসিন্দা জানান, “এই পানিতে গোসল করাও কষ্টকর, রান্না তো দূরের কথা। বাচ্চারা পানি মুখে দিতেই চায় না। বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে পানি এনে ব্যবহার করছি।”
কল্যাণপুরের এক ভুক্তভোগী বলেন, “গত দেড় মাস ধরে পানির অবস্থা ভয়াবহ। ট্যাপ ছাড়লেই পোকা দেখা যায়। দুর্গন্ধ এতটাই বেশি যে মুখ ঢেকে পানি চালাতে হয়। কাপড় বেঁধে ফিল্টার করেও খুব একটা লাভ হচ্ছে না।”
এই পরিস্থিতির ফলে স্থানীয়দের মধ্যে পেটের সমস্যা, স্কিন ইনফেকশন, ও চুলকানির মতো অসুস্থতা বেড়েই চলেছে বলে অভিযোগ।
এ বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার সঙ্গে যোগাযোগ করলে, তাদের তিনজন কর্মকর্তা সরেজমিনে মধুবাগ এলাকায় যান এবং কয়েকটি বাসা থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করেন। এতে পোকার উপস্থিতি দেখা গেলেও, ওয়াসা তা ট্যাংক পরিষ্কারের ঘাটতি বলে দাবি করেছে।
ঢাকা ওয়াসার উপসহকারী প্রকৌশলী তৌফিক আহমেদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, “পানি সরবরাহ লাইন পরিষ্কার আছে। বাসার ট্যাংকগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করাতেই এমন সমস্যা দেখা দিচ্ছে। নিয়মিত পরিষ্কার করলে এমন হবে না।”
তবে, বাসিন্দারা এই দাবিকে অস্বীকার করে বলছেন, “বারবার পরিষ্কার করার পরও পানিতে দুর্গন্ধ ও পোকা পাওয়া যাচ্ছে।”
তারা ওয়াসার পানির পাইপ পরীক্ষা করে দেখার দাবি জানিয়ে বলেন, সমস্যার মূল উৎস যেন সঠিকভাবে নির্ধারণ করা হয়।
ওয়াসার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে এবং পাইপলাইনের মান পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।